মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফুটপাত দখল করে চলছে ব্যবসা

চট্টগ্রামে কোটি টাকার মাসোহারা পাচ্ছেন প্রভাবশালীরা

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

নগরীর ফুটপাত দখল করে রেখেছেন ভাসমান ব্যবসায়ী ও হকাররা। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশের কতিপয় সদস্যকে মাসোহারা দিয়ে নিশ্চিন্তে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তারা। ফলে দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে মূল সড়ক। এতে পথচারীদের চলতে হয় সড়কের ওপর দিয়েই। ফুটপাত দখল করে রাখার ফলে একদিকে যেমন যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে মূল সড়কে পথ চলাচলের কারণে ঘটছে নিয়মিত দুর্ঘটনা। ফুটপাত দখল নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ মেয়রও। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হকার সব সময় ছিল। কিন্তু এখন এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যেন ফুটপাতগুলো টাইলস করে দেওয়াই হয়েছে তাদের ব্যবসা করার জন্য। আর রাস্তায় ভ্যানগাড়ির কারণে প্রচন্ড জ্যাম হচ্ছে। হকারদের জন্য শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে মেয়েরা স্কুলেও ঢুকতে পারে না। অনেকে হকার পুনর্বাসনের কথা বলেন। আগে হকার পুনর্বাসন কোনো সুফল বয়ে আনেনি। এর আগে হকারদের জহুর হকার মার্কেটে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু দোকান বরাদ্দ পেয়েই অনেকে দোকান বিক্রি করে আবারও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করেন। এ কারণে শুক্র ও শনিবার আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় উপযুক্ত স্থানে হলিডে মার্কেট চালু করার পক্ষে মত দেন তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরজুড়ে চলছে ফুটপাত দখলের প্রতিযোগিতা। এ থেকে পিছিয়ে নেই নগরীর ব্যবসাবাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র জুবলী রোড থেকে এনায়েত বাজারের মোড় ও কাজির দেউড়ি এলাকা। জুবলী রোডের ফুটপাত ওই এলাকার মানুষ সর্বশেষ কখন দেখেছে, তা কেউ জানে না। এ সড়কের মেশিনারিজ ও টাইলস ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে রেখেছেন। নিউমার্কেট থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত কোনো ফুটপাতই নেই। সড়কই পথচারীদের হাঁটার জায়গা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা প্রতিদিনের ঘটনা। আর এসব হকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। ক্ষমতায় যে দল থাকে এসব সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ করেন সেসব দলের স্থানীয় নেতারা। এসব সংগঠনের নেতারা ফুটপাতে বসা হকারদের কাছ থেকে আদায় করছেন কোটি কোটি টাকা। জানা যায়, নগরীর নিউমার্কেট, আমতল, রিয়াজুদ্দীন বাজার, লালদীঘি, টেরিবাজার এলাকায় ফুটপাতে দোকান দখল করে একটি চক্র। দু-তিন মাস পর সে দোকান ৩-৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয় অন্য পক্ষের কাছে। আবার অনেকে দৈনিক ভিত্তিতেও বিক্রি করে এসব দোকান। আবার দোকান থেকে দৈনিক ভিত্তিতে টাকা আদায় করেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশের সদস্যরাও। এসব এলাকায় হকার সংখ্যা কত তার সঠিক তথ্য কারও কাছে নেই। তবে নিউমার্কেট, তিনপোল, আন্দরকিল্লা, টেরিবাজার, স্টেশন রোড, কোতোয়ালি এলাকায় ২৫ হাজারের মতো হকার রয়েছে, যারা ফুটপাত এবং সড়কে ব্যবসা করে। পুরো নগরীতে ৫০ হাজারের বেশি হকার রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর