রাজশাহীর বড়কুঠির সামনে পদ্মায় একসময় পানি ছিল। সেখানে নৌকাও চলত। কিন্তু এখন পানি নেই। নদীর জায়গা দখল করে সেখানে গড়ে উঠেছে ফুডকোর্ট। রাজশাহীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চের স্থানে কয়েক বছর আগেও ছিল প্রমত্ত পদ্মার জলধারা। কয়েক বছর আগে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সেখানে চর জেগেছে। বর্ষায় কিছুদিন পানি উঠলেও সারা বছর থাকে শুকনো। নদী আরও দক্ষিণ দিকে সরে গিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেগে ওঠা চরগুলো দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে দোকানপাট ও স্থায়ী পাকা স্থাপনা। ব্যক্তিগত দখল ছাড়াও রাজশাহী সিটি করপোরেশন এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নির্মাণ করেছে একাধিক পাকা ভবন। শুধু তাই নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শহররক্ষা বাঁধ ঘিরে নদী দখলে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। অবৈধ দখলদার হিসেবে ১ হাজার ৬১২ জনকে চিহ্নিত করেছে পাউবো। তাদের উচ্ছেদের জন্য তালিকা করে ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর।
তালিকা অনুযায়ী, বিজিবি নদীর বিশাল এলাকা দখল করে তৈরি করে রেখেছে ‘সীমান্তে অবকাশ’ ও ‘সীমান্তে নোঙর’ নামে দুটি রেস্তোরাঁ, সম্মেলন কেন্দ্র, ফাস্টফুড ও কফি শপ। নদীর ভিতরে ‘বাতায়ন’ নামে করেছে আরও একটি দ্বিতল ভবন। এর পাশেই নিজেদের জমি উল্লেখ করে দখলে নিয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। নগরীর বড়কুঠি, শহীদ মিনার, তালাইমারী ফুলতলা ঘাটেও এ ধরনের স্থাপনা তৈরি করেছে সিটি করপোরেশন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘নদী দখল করে গড়া স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য তালিকা করা হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। প্রভাবশালী যে-ই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না। জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।’