স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মব ভায়োলেন্স বন্ধ করা যাচ্ছে না, কিন্তু অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে। দেশের সব বাহিনীর প্রধান এটা নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচন করতে যত ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা দরকার হবে নির্বাচন কমিশনের, সেটা আমরা দেব। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার ঘটনায় আমরা সবাই দুঃখিত। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত আছে কি না, খুঁজে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারও দুর্বলতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘মব’ নিয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মব ভায়োলেন্স’ বন্ধ করা যাচ্ছে না, কিন্তু অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। একই সঙ্গে মব ভায়োলেন্সের একটা বড় সংখ্যার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মব ভায়োলেন্স আগের থেকে অনেক কমেছে। এখন পর্যন্ত মব ভায়োলেন্সে জড়িত কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে সংখ্যা বলতে পারব না। তবে বড় একটি সংখ্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ সময় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা কেটেছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ নিষ্ক্রিয় নয়। পুলিশ আগের থেকে অনেকটা মানবিক হয়েছে। পুলিশের সক্ষমতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। আগের থেকে তাদের ট্রেনিং ও মনোবল অনেক ভালো হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কোনো কার্যক্রম করতে পারেনি। আমরা যতটা আশা করছিলাম, ততটা মিছিল হয়নি। দলটি বড় কিছু করতে পারেনি। তারা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।
রাতের ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্লিপ্ততার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সে সময় তো আপনারাও মাঠে ছিলেন, কোনো কিছু বলেননি। এটা শুধু পুলিশ নয়, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার এদেরও কিন্তু একটা ভূমিকা থাকে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাহিনীর প্রধানরা নিশ্চিত করেছেন যে, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে। তবে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকাটা শুধু বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। যারা নির্বাচনে অংশ নেন, তাদের ওপরও কিন্তু নির্ভর করে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু পুরো নির্বাচন নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের ওপর। দেশের সব বাহিনী কিন্তু তখন তাদের আন্ডারে কাজ করে। নির্বাচন কমিশন জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবে-এটাই আমরা সবাই আশা করি। নির্বাচন করতে যত ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা দরকার হবে নির্বাচন কমিশনের, সেটা আমরা দেব।