কক্সবাজারের উখিয়ায় এবার বসুন্ধরা শুভসংঘের পক্ষ থেকে অসচ্ছল, স্বামী পরিত্যক্তা, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীসহ ১০ নারীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সেলাই মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। টানা তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে হাতে সেলাই মেশিন পাওয়ার পর তাদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ-পরবর্তী বসুন্ধরা শুভসংঘের দেওয়া এসব সেলাই মেশিন যেন তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের দিশা হয়ে উঠবে, এমনটাই জানিয়েছেন উপকারভোগী এসব নারী। গতকাল সকালে উখিয়া উপজেলার ভালুকিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘ উখিয়া উপজেলা শাখা সেলাই মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল হক। সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান শিমুলের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উখিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিমল বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন, বসুন্ধরা শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি শামীম আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রানা মিত্র, কালের কণ্ঠের চকরিয়া প্রতিনিধি ছোটন কান্তি নাথ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিমল বড়ুয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে অনেক শিল্পপতি বা ব্যবসায়ী গ্রুপ রয়েছে। তাদের মাঝে একমাত্র অনন্য হচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে খুঁজে খুঁজে অসহায়, দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রশিক্ষণ-পরবর্তী তাদের হাতে বিনামূল্যে সেলাই মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তুলে দেওয়ার এই উদ্যোগ বিরল এবং মহানুভবতা।
প্রশিক্ষণ শেষে বহুল প্রতীক্ষিত সেলাই মেশিন হাতে পেয়ে বেশ উচ্ছ্বাসিত রাজাপালং ইউনিয়নের সিকদার বিলের আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী আবদুল আলম এক সন্তান রেখে আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই নিদারুণ আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। এই পরিস্থিতিতে আমি এবং একমাত্র সন্তানের জন্য দুই বেলা খাবার জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করতে বাধ্য হই। আনোয়ারা বেগম আরও বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে দুই বেলা খাবার জুটলেও একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ কিন্তু একেবারেই অনিশ্চিত। তাই বসুন্ধরা শুভসংঘের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ-পরবর্তী দেওয়া এই সেলাই মেশিনটিই হবে আমার সন্তানের ভবিষ্যতের জীবন দিশা। এখন যে সময়টুকু পাওয়া যাবে তাতে সেলাই মেশিন দিয়ে পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করে উপার্জিত অর্থ দিয়েই সন্তানের পড়ালেখা চালিয়ে নেব।