জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদদের এককালীন অনুদান ও মাসিক ভাতা তিন ভাগে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। স্বামী বা স্ত্রী এক ভাগ, সন্তান এক ভাগ এবং বাবা-মা পাবেন আরেক ভাগ। আর্থিক সহায়তা বণ্টনের এমন নিয়ম রেখে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সরকারি সহায়তাকে কেন্দ্র করে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে অনেক শহীদ পরিবারের স্বামী-স্ত্রী, সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকার বণ্টনের পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিল।
বিধিমালায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা সমমূল্যের জাতীয় সঞ্চয়পত্র এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে এককালীন ৫ লাখ, ৩ লাখ ও ১ লাখ টাকা এবং মাসিক ২০, ১৫ ও ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার বিধান রাখা রয়েছে। এসব অনুদান ও ভাতা গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। বিধিমালায় বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বামী বা স্ত্রী, ঔরসজাত বা গর্ভজাত সন্তান এবং মা ও বাবার মধ্যে সমান তিন ভাগে বণ্টন করতে হবে। সে হিসেবে জুলাই-শহীদদের স্বামী বা স্ত্রী আর্থিক সহায়তায় এক-তৃতীয়াংশ, সন্তান এক-তৃতীয়াংশ এবং মা-বাবা এক-তৃতীয়াংশ পাবেন। জুলাই শহীদদের একাধিক স্ত্রী/স্বামী, একাধিক সন্তান থাকলে তাদের মধ্যে আর্থিক সহায়তা সমানভাবে ভাগ করে দিতে হবে। আবার মা-বাবার জন্য বরাদ্দ হওয়া অংশ সমানভাবে ভাগ করে দিতে হবে। বাবা অথবা মায়ের কেউ একজনের অবর্তমানে ওই অর্থ একজন পাবেন। বিধিমালায় অনুদানের অর্থ ভাগ করে দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, শহীদদের স্বামী/স্ত্রী না থাকলে ওই অংশ তার পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যে সমান ভাগ করে দিতে হবে। শহীদদের কোনো সন্তান না থাকলে তার অংশও বাকি সদস্যদের মধ্যে ভাগ করতে হবে। বিধিমালায় বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ব্যক্তি অবিবাহিত হলে তার অনুকূলে বরাদ্দ ভাতা মা-বাবা পাবেন অথবা কোনো একজনের অবর্তমানে অপরজন সম্পূর্ণ পাবেন। ভাতা পাচ্ছেন শহীদ পরিবারের এমন কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে তার অংশের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। এই অংশ শহীদ পরিবারের অন্য কেউ দাবি করতে পারবে না। আবার শহীদ ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামী অন্য কাউকে বিয়ে করলে তার অংশের ভাতাও বন্ধ হয়ে যাবে।
চিকিৎসাসেবার বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, সব সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, সরকারি ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং এজন্য নির্ধারিত বিশেষায়িত হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা পাবেন। এজন্য কোনো লিখিত আবেদনের প্রয়োজন হবে না। তবে এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হেলথ কার্ড দেখাতে হবে।