করোনায় স্থবির হয়ে গেছে সিরাজগঞ্জ। জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোতে গণপরিবহন, মার্কেট, দোকানপাট ও চা স্টলসহ সব ধরনের জনসমাগম বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে সরকারী সিদ্ধান্ত মেনে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করলেও কিছু কিছু মানুষ এখনো নিত্য প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। আর মানুষকে ঘরে ফেরাতে শহর ও শহরতলীতে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, কাজকর্ম বন্ধ থাকায় দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগে পড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশ ফেরত নতুন আরো ৩৯ জনসহ ৫২৬ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের প্রতিটি বিপণী বিতান, দোকানপাট, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, চা স্টল ও জনসমাগম বন্ধ রয়েছে। শুধু কাঁচামাল, ওষুধ ও মুদি দোকান খোলা হয়েছে। শহরের মধ্যে শুধু কিছু রিক্সা চলাচল করছে। তবে রিক্সা ভাড়াও যাত্রীদের দ্বিগুন গুণতে হচ্ছে। কিছুক্ষন পরপর পুলিশের টহল গাড়ি টহল দেওয়ার পাশাপাশি বাইরে থাকা মানুষকে ঘরে ফিরে যাবার নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। জনসমাগম না করতে মাইকিং করছেন। যারা ঘরের বাইরের বের হচ্ছে অধিকাংশ মানুষ মাস্কবিহীন রয়েছে। দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল ফুটপাতের দোকানদার ও চায়ের দোকানদার ও দিনমজুর-শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে অভাব অনটন দেখা দিতে শুরু করেছে।
শহরের ফুটপাতের দোকানদার আহসান ও চা দোকানদার আলম সেখ জানান, দিনের আয়ের উপর পরিবার নির্ভরশীল। সবকিছু বন্ধ। আয় রোজগার বন্ধ। কিন্তু পরিবার-পরিজনের মুখে আহার দিতেই হবে। দু'একদিন হয়তো ধারদেনা করে চলা যাবে। এরপর কি করবো বুঝতে পারছিনা। এ অবস্থায় সরকারী সহায়তা না পেলে দুর্বিসহ অবস্থায় পড়তে হবে।
সিরাজগঞ্জ সার্জন ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন বিদেশ ফেরতদের খুজে বের করে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। কেউ নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম জানান, ওষুধ ও কাঁচামাল ব্যতিত সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জোরপূর্বক নয় করোনার ভয়াবহতা নিয়ে জনসাধারনকে বুঝিয়ে তাদেরকে ঘরে থাকার জন্য পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষনিক মাঠে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ টন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে এগুলো বিতরণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল