২ এপ্রিল, ২০২০ ১০:০৯

করোনায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

অনলাইন ডেস্ক

করোনায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের বেলায় কোভিড-১৯-এর ছোবল অন্যদের তুলনায় বেশি মারাত্মক বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই বাঁচার উপায় বলতে রোগটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা উচিত। না হলে হার্ট থেকে শুরু করে কিডনি, চোখ, ত্বক, শিরা-ধমনী, সবার যেমন স্বাস্থ্য খারাপ হবে, বাড়বে সংক্রমণের আশঙ্কাও।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে সারা পৃথিবীতে ২৩ কোটি ২০ লাখ ডায়াবেটিস এর রোগী রয়েছেন। সেই হিসেবে যত্নের মান না বাড়লে ২০৩০-এ এই সংখ্যাটা হবে, ৩৬ কোটি ৬০ লাখ। 

এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে যে কোনও সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। বাড়ে কোভিডের আশঙ্কাও। ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস বা ‘ডিকেএ’ নামের সমস্যা হলে কোভিডের দরুণ যে সব জটিল পরিস্থিতি হচ্ছে তা সামলানো খুব কঠিন হয়ে যায়।  

কোভিড এড়ানোর নিয়ম মানার সঙ্গে এই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সুগারকে নিক্তির মাপে আনতে মেনে চলুন কিছু বিষয়।

সুগার ও সুগারজনিত বিপদ সামলাতে

• রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে যে ভাবে চলছিলেন, সে ভাবেই চলুন। ঘরে আছেন বলে ব্যায়াম যেন বন্ধ না হয়। কারণ এতে ওজন-ডায়াবেটিস যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকে, বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।

• পানি বেশি খান। এমনিও তা করা দরকার। তাছাড়া সুগারের কিছু ওষুধ আছে যা খেলে জল বেশি না খেলে সমস্যা হতে পারে।

• ধূমপান করবেন না। কারণ করোনাভাইরাস যে রিসেপ্টার দিয়ে শরীরে ঢোকে, ধূমপান করলে ওই রিসেপ্টার বেশি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে বলে। এছাড়া ধূমপান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে।

• টেনশন করবেন না। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে কথাটা বলা যত সহজ, করা ততটা নয়। তবু চেষ্টা করুন। কারণ টেনশন করলে লাভ তো হবেই না, বরং এতে ডায়াবেটিস যেমন বেড়ে যেতে পারে, কমতে পারে সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। কাজেই দ্বিগুণ বিপদ। সাধারন জ্বর-সর্দি-কাশি হলেও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। কারণ নানা ওষুধের নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে ডায়াবেটিসের উপর।

• ডায়াবেটিস কোনও কারণে বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তার পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া বুঝে করুন। ভাত-রুটি কম খেয়ে সবুজ শাক-সবজি খাওয়া বাড়ান। হাঁটাহাটি ও ব্যায়াম বাড়ান।
 

ডায়াবেটিসের রোগীদের কোভিড-১৯ ঠেকানোর নিয়ম মানুন
 

• দিনে ৫-৬ বার হাত ধোবেন। কোনও কারণে বাইরে যেতে হলে বা বাইরের কিছু ধরলে ঘরে এসে পানি ও সাবান দিয়ে কম করে ২০ সেকেন্ড হাত ধুয়ে নেবেন। স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবান কোনও অংশে কম নয়। একান্তই বাইরে বের হলে উপায় না থাকলে তখন একমাত্র স্যানিটাইজারের প্রশ্ন। এবং তাতে যেন ৭০ শতাংশের বেশি অ্যালকোহল থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

• রান্না, পরিবেশন ও খাওয়ার আগে হাত ভাল করে ধুয়ে নিন। নিজের থালা-বাটি-গ্লাস আলাদা করে নিন। কারও শ্লেশ্মাজনিত অসুখ হলে দরকারে জামা-কাপড়-তোয়ালেও আলাদা করতে হবে।

• নিতান্ত অপারগ না হলে বাইরে যাবেন না। 

অন্যরা একটু অনিয়মের ধকল সামলাতে পারলেও, আপনি হয়তো নাও পারতে পারেন। কাজেই কিছু জিনিস বেশি করে কিনে রাখুন। যেমন: পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। শাক, সবজি, ফল, চিকেন, মাছ, ডিম ইত্যাদি। 

হাতের কাছে চিনি-বাতাসা, মধু, ফলের রস, চকলেট জাতীয় মিষ্টিও কিছু রাখবেন। যদি হঠাৎ ডায়াবেটিস খুব কমে যায়, তখন কাজে আসবে।

প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনসুলিন কিনে রাখুন। মেশিনে সুগার মাপার স্ট্রিপ কিনে রাখুন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর