প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে রাজধানী ঢাকার পর সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত এলাকা হচ্ছে শিল্প ও বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ। বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪১ জনের মধ্যে ১৫ জনই নারায়ণগঞ্জের। এছাড়া ২০ জন ঢাকায় শনাক্ত হয়েছেন।
এদিকে, একদিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে, মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে পৃথক ৩টি এলাকায় মারা যান তারা। এর আগেও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় সিটিসহ দুটি থানা এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
তবে ক্রমেই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জে করোনা পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে করোনা সতর্কতার উদাসীনতা রয়েছে। ফলে সিটি মেয়র নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন এমনকি কারফিউ জারির দাবিও করেছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানও লকডাউনের দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা মনে করছেন এতেই বুঝা যায়, ব্যাপক করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে নারায়ণগঞ্জ।
এলাকাবাসী জানান, এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন করেছে প্রশাসন। অল্প সময়ের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জে করোনায় মৃত্যু হার শঙ্কিত হওয়ার মতো।
এখন থেকেই নমুনা সংগ্রহ এবং দ্রুত পরীক্ষা ও রিপোর্ট প্রদান নিশ্চিত করা না গেলে শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সারাদেশে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ বলেন, বর্তমান অবস্থায় করোনা শনাক্তে নারায়ণগঞ্জে একটি ল্যাবের বড়ই প্রয়োজন। কারণ এর আগে নারায়ণগঞ্জের যে কয়জন করোনায় মারা গেছেন, তাদের লাশ দাফনের পর জানা গেছে তারা করোনায় মারা গেছেন। তাই ল্যাব থাকলে আরও দ্রুত করোনা সংক্রমিত লোকের তথ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বন্দর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির সোহেল জানান, শিল্পাঞ্চল এবং ঘনবসতির কারণে নারায়ণগঞ্জ এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে অনেকে।
রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে প্রশাসনের এখনই উচিত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া।
জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এই প্রক্রিয়ার জন্য যে দক্ষ জনবল, দক্ষ টেকনিশিয়ান, উপযুক্ত মেডিকেল বা মেশিনারিজের প্রয়োজন তা আমাদের এখানে নেই।
এই অবস্থায় এখন নারায়ণগঞ্জে ল্যাব স্থাপন করার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম