আধুনিক বিজ্ঞানের ছোয়া এবং বাংলাদেশের চিকিৎসক এ আর খানের সফল অস্ত্রপচারে আলাদা হওয়া বীরগঞ্জের সেই জোড়া লাগানো জমজ বোন মনি-মুক্তার পঞ্চম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল শুক্রবার। শুক্রবার বিকেলে কেক কেটে পঞ্চম জম্ম বার্ষিকী পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
মনি মুক্তা সুস্থ্ এবং ভালো আছে। তারা একে অপরের সাথে খেলা করে এবং কথা বলে। আগামী জানুয়ারীতে তাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবেন বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা-মা।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের পুত্র জয় প্রকাশ পালের স্ত্রী কৃষ্ণা রাণী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের ২২শে আগষ্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে মনি-মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়।
জয় প্রকাশ পাল জানান, সে সময় গ্রামের মানুষ এটাকে অভিশপ্ত জীবনের ফসল বলে প্রচার করতে থাকে। সমাজের নানা কুসংস্কারে প্রায় এক ঘরে হয়ে পড়েন। সমাজের নানা অপবাদে গ্রামে যাওয়া বন্ধ করে দেন। হতাশার মাঝেও স্বপ্ন দেখেন মনি-মুক্তাকে নিয়ে। বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য। রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ বোনকে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারী ঢাকা শিশু হাসপাতালে মনি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়। অতঃপর ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী ঢাকা শিশু হাসাপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা লাভ করে। ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী দুইকন্যাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ী ফেরেন।
স্ত্রী কৃষ্ণা রাণী পাল জানান, সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদে এবং ডা. এ আর খানের সাফল্যে আমরা মনি-মুক্তাকে স্বাভাবিকভাবে ফিরে পেয়েছি। তিনি তাদের এবং পরিবারের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন।