লুটপাটে গ্রামছাড়া ৩০ পরিবার

কেটে নেওয়া হচ্ছে খেতের ধান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রিন্ট ভার্সন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংঘর্ষে রজব আলী (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষের বাড়িতে অব্যাহত লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে ৩০ পরিবারের মানুষ। ওই যুবকের মৃত্যুর পর সাবেক ইউপি সদস্য করিমকে প্রধান করে ২৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা ইছুব আলী। আসামি পক্ষের দাবি, গত ১৬ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় রজব আলীর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই তাদের বাড়িতে হামলা লুট শুরু হয়। পুলিশের কাছে লুটপাটের বিষয়ে মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। কৌশলে বিবাদী পক্ষের লোকজন আসামি পক্ষের বাড়ি পাহারার ব্যবস্থা করে। সারা দিন পাহারা দিয়ে রাতে চালায় লুটপাট। এ ছাড়া বাড়িতে মানুষজন না থাকায় তাদের পাকা ধানের ফসলও কেটে নিয়ে যাচ্ছে। হত্যা মামলার বাদী বাবা ইছুব আলী বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের পক্ষের কোনো লোক লুটপাট করেনি। প্রতিপক্ষ ঘরের মালামাল নিজেরাই সরিয়ে নিয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, রজব আলীর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছলে আতঙ্কিত হয়ে আসামি পক্ষের ৩০ পরিবারের নারী-শিশুসহ শতাধিক মানুষ গ্রাম ছেড়েছে। তাদের ঘরবাড়ি অরক্ষিত পড়ে আছে। ওই সব পরিবারের পাকা ধানও পড়ে আছে মাঠে। তারা জানান, মাঠের ৫ বিঘা ধান কেটে নিয়ে গেছে নিহতের পরিবারের লোকজন। তাদের ঘরে নেই কোনো জিনিসপত্র। দরজা তালাবদ্ধ। আসামি পক্ষের অভিযোগ, একটি হত্যাকা-কে পুঁজি করে ৩০ পরিবারের ৪০টি গরু, ৬টি ষাঁড়, ২০০ হাঁস-মুরগি, ৫ বিঘার পাকা ধান ও বিভিন্ন আসবাবপত্র লুট করে নিয়েছে নিহতের স্বজনরা। তাদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে শিশুসহ শতাধিক নারী-পুরুষ। চাতলপাড় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রজব আলী। এরপর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। লুটপাটের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। নাসিরনগর থানার ওসি সাজেদুর রহমান জানান, সংঘর্ষে মামলা হয়েছে। দুজন আসামিও গ্রেফতার হয়েছে। আসামিদের বাড়িঘরে লুটপাট হয়েছে এমন খবর পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল নাসিরনগরের চাতলপাড় ইউনিয়নের বড়নগর গ্রামে ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এতে আহত রজব আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।