রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

শ্রীমঙ্গলে আলু চাষের সম্ভাবনা

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

শ্রীমঙ্গলে আলু চাষের সম্ভাবনা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আলু চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলতি বীজ আলু সংরক্ষণ মৌসুমে এ উপজেলায় ভীত্তি বীজ আলু চাষ করে এ সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় বিএডিসি। দেশে আলুর উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উদ্যোগে এ উপজেলার জানাউড়া ব্লকে ৩০ একর ও ভিমশী ব্লকে ৫ একর জমিতে ভীত্তি বীজ আলুর চাষ করা হয়েছে। এই দুটি ব্লক থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন। স্থানীয় বিএডিসি কর্মকর্তারা জানান, এ উপজেলায় উৎপাদিত ভীত্তি বীজ আলু হিমায়িত ঘরে সংরক্ষণ করা হবে। পরে নভেম্বর মাসে রোপন মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মধ্য এই ভীত্তি বীজ আলু বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া এ এলাকায় প্রচলিত জাতের আলুর সঙ্গে শিল্পে ব্যবহৃত ও রপ্তানি যোগ্য আলু চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগালে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে। জানা যায়, এ বছর সিলেট বিভাগে ভীত্তি বীজ আলু চাষের সবচেয়ে বড় ব্লক জানাউয়া গ্রামে। মানসম্মত বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের লক্ষ্য কৃষকদের দিয়ে এই ভীত্তি বীজ আলুর চাষ করানো হয়েছে। গ্রামের পতিত জমি ইজারা নিয়ে চারজন কৃষক ৩০ একর জমিতে ভীত্তি বীজ আলু চাষ করেন। এখান থেকে উৎপাদিত হবে প্রত্যায়িত বীজ আলু। এখানে ডায়মন্ড এবং এ্যাস্ট্রেরিক্স জাতের উচ্চ ফলনশীল আলুর বীজ রোপণ করা হয়েছে।  জমি চাষে কৃষককে সরকার থেকে প্রতি কেজি সারে ২ টাকা ও বীজে প্রায় ২০ টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক ঋণ পেতে কৃষককে সাহায্য করা হচ্ছে। আবার উৎপাদিত প্রত্যায়ীত বীজ আলু কৃষকদের নিকট থেকে সরকার কিনে নেবে। দাম দেওয়া হবে বাজারের খাবার আলুর মূল্য থেকে দেড়গুণ বেশি। জানাউড়া ব্লকের চাষি নাজমুল হাসান জানান, তারা চারজন মিলে গত বছরের নভেম্বর মাসে জমিতে বীজ আলু রোপণ করেছেন। ২২ কেয়ারে সাদা আর ৮ কেয়ারে লাল আলু। আলু তুলতে সময় লাগবে ৮৫ দিন। ফলন খুব ভালো হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মতো। তাদের উৎপাদন টার্গেট ২০০ টন। ২৩ টাকা করে কেজি দরে বিক্রি করলেও তাদের আসবে ৪৬ লাখ টাকা। প্রথম বছরে লাভ কম হলেও পরে ভালো হবে বলে তিনি জানান। তাছাড়া সরকারি সুযোগ সুবিধা আরও বৃদ্ধির দাবি জানান। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশেন উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমান বলেন, আলু আমাদের একটি প্রধান খাদ্য ফসল। তাই এ অঞ্চলে কৃষকদের আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। আমরা যদি প্রচলিত জাতের আলুর বাইরে গিয়ে শিল্পে ব্যবহার ও রপ্তানি যোগ্য আলু বেশি করে চাষ করতে পারি তাহলে আলু রপ্তানি করা যাবে।

এ এলাকার মাটি সাধারণত এসিডিক। এই মাটিকে নিরপেক্ষ করে শিল্পে ব্যবহৃত ও রাপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন করা সম্ভব। অন্য এলাকার চেয়ে এই এলাকায় মানসম্মত আলু উৎপাদন হবে। এর কারণ হলো এখানে আলুর চাষ কম হয়, তাই আলুতে পোকা বা রোগবালাই কম হবে। অন্য জাতের সংমিশ্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। 

সর্বশেষ খবর