রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

জয়পুরহাটে ঝুঁকিতে সেতু

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে ঝুঁকিতে সেতু

নদীর পাড় ভেঙে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মিত শিমুলতলী সেতু ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ফলে সেতুতে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা বাড়ছে।  জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সেতুটি রক্ষা করার জন্য বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙন রক্ষার কাজ করছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর আশঙ্কা ভরা বর্ষা মৌসুম শুরু হলে উজান থেকে নেমে পানির প্রবল স্রোতে যে কোনো সময়ে সেতু মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশের গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় সেতুটি হুমকির মুখে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলাকা সূত্রে জানা গেছে, শিমুলতলী সেতুটি ১৯৯৫ সালে জেলার ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মিত হয়। ওই সেতুর উপর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পাঁচবিবি উপজেলা সদর এবং জয়পুরহাট জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। কৃষকের বিভিন্ন উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ওই সেতুর ওপর দিয়ে হাট-বাজারে নিয়ে যান কৃষকরা। এলাকাবাসীর দাবি যেকোনো ভাবে সেতুটি রক্ষা করা হোক। গত ২৯ মে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সেতু এলাকা। তিনি নদীর পাড় ভাঙনরোধ এবং সেতুরক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। গ্রামবাসীর অভিযোগ সেতুটির পশ্চিম পাড়ের  ১৫০-২০০ মিটার উত্তরে ডেজিং মেশিনে নদীর তলদেশ থেকে গভীর করে বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। ফলে সেতুর পশ্চিম অংশের কৃষকের কৃষি জমি ভাঙনসহ সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদীর পূর্ব পাড়ের অংশে নদী খননে ছাড় দিয়ে সেতুর পশ্চিম অংশের দিকে খনন করায় নদীর পশ্চিম পাড় ভাঙতে শুরু করে এবং সেতু হুমকির মুখে পড়ে। ভাঙনে নদীর পাড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ায় গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসী সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় গত ২৯ মে থেকে।

জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গিয়ে মানুষকে শান্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পুনরায় সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল ওই দিনই শুরু হয়। গতকাল দুপুরে সরেজমিন  গিয়ে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে পশ্চিম পাড়ে তা ফেলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিকরা। ঘটনাস্থলে জয়পুরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী গোলাম রব্বানি জানালেন, ইতিমধ্যে তারা ২ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ভাঙনরোধে নদীর ধারে ফেলেছেন। আরও ২ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ তৈরি করে তা ফেলানোর অপেক্ষায় আছে। তারা সেতুটি রক্ষার জন্য সেতুর পিলারের চার পাশ দিয়ে ব্লক ফেলেছেন। কাজ অব্যাহত রয়েছে। খাসবাট্টা গ্রামের বাবুল করিম, লুৎফর রহমান, বাদেশ আলী, চরণ চন্দ্র মাহাতো জানালেন,  ব্রিজ থেকে সামান্য দূরে দীর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলনকারীরা নদীতে ডেজিং মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশের গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় আজ ব্রিজ এবং কৃষকের ফসলি জমির সর্বনাশ হচ্ছে। ডিসি সাহেব এসে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জরুরিভিত্তিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ  দেওয়ার তারা কাজ শুরু করেন। তাদের অভিযোগ এ বিষয়ে এর আগে প্রশাসনে একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিলে ওই দিন প্রশাসনের টনক নড়ে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর