শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বপ্নের ঠিকানায় ভাগ্য বদল

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

স্বপ্নের ঠিকানায় ভাগ্য বদল

আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিতে সবজি চাষ করছেন সুবিধাভোগী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

তারা ছিলেন ভূমিহীন। অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাস করত। কারও কারও ঘর ছিল না। মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর ও জমি দুটোই পেয়েছেন তারা। পেয়েছেন স্বপ্নের ঠিকানা। অসহায় এসব মানুষের জন্য সরকারিভাবে নির্মিত ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, পাকা টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা প্রশাসন সবসময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের খোঁজ রাখে। নতুন ঠিকানা পেয়ে অনেকেই উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। বদলাচ্ছে তাদের জীবনব্যবস্থা। এখানে ঠাঁই হওয়া পরিবারগুলোর বড় একটি অংশ আগের চেয়ে ভালো আছে বলে জানিয়েছেন তারা। সরেজমিন জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে শেরপুর জেলায় মোট ১ হাজার ১১৮ জনের ঠাঁই হবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। ইতোমধ্যে ৭৯৪ জনকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি মার্চের মধ্যে আরও ১৬৯ জন উঠবেন নতুন ঘরে। বাকি ১৫৫ জনের জন্য ঘর করার প্রক্রিয়া চলছে। নতুন ঠিকানা পেয়েছেন- এমন লোকজন জানান, শুধু ঘর নয়, তারা আত্মসম্মান ফিরে পেয়েছেন। সদরের চরপক্ষীমারির আশ্রয়ণ প্রকল্পে উঠেছেন আকতার আলী ও জেসমিন দম্পতি। আকতার এখন একটি চা-স্টলের মালিক। গবাদি পশু পালন ও সবজি চাষ করেন জেসমিন। ছেলে কলেজে যাচ্ছে। হাতী আগলা প্রকল্পের বাসিন্দা ইসমাইল ও জুলেখা দম্পতি। তারা আগে ছিলেন গৃহহীন। সারা দিন রিকশা চালিয়ে থাকতেন অন্যের বাড়িতে। ইসমাইল এখনো রিকশা চালান। তবে ঘর পেয়ে শান্তি ফিরেছে এই দম্পতির। তিনি সরকারি সহায়তায় সবজি ও ফল বাগান করেছেন। গবাদি পশু আছে দুটি। এই দম্পতির ছেলে-মেয়ে নিয়মিত স্কুলে যায়। এভাবে বদলাতে শুরু করেছে নকলার সবুজ, শাহানা, নবী হোসেন ও জেসমিনের জীবন। তারা বলেছেন, নিজ ঘরে থেকে স্বাধীন ও মুক্ত বাতাস নিতে পারি। যা আয় করেন তা থেকে কিছু সঞ্চয়ও থাকে। ঝিনাইগাতি আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা মিলেছে ভিক্ষাবৃত্তি করা রশিদ, স্বামী পরিত্যক্তা তাছলিমা, লাকড়ি কুড়িয়ে জীবন চালানো নাজমার। রশিদ এখন দোকান করছেন, নাজমার কাজ জুটেছে সরকারি প্রকল্পে। তাছলিমা হস্তশিল্পে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ জানান, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ জমি-ঘর পেয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচার আনন্দ পেয়েছে। এখন তারা সোনালি দিনের স্বপ্ন দেখেন। সরকারি সব সুবিধা তাদের দেওয়া হচ্ছে। তাদের একেবারে বদলাতে আরও সময় ও সুযোগ লাগবে।

সর্বশেষ খবর