মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট ৭০ একর জমির ধান

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট ৭০ একর জমির ধান

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ও ফতেহপুর ইউনিয়নে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় নষ্ট হয়েছে প্রায় ৭০ একর জমির ধান। কষ্টের ফসল হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। জানা যায়, গোড়াই ইউনিয়নের কদিম দেওহাটা, মীর দেওহাটা, দেওহাটা মল্লিকপাড়া, সারেংবাড়ি এবং ফতেহপুরের থলপাড়া, হিলড়া ও হিলড়া আদাবাড়ী এলাকায় পাশাপাশি কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের খেতের ধান গাছ লালচে ও বিবর্ণ হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শীষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন সবজি খেতও। এ ছাড়া স্থানীয় ভাটার কাঁচামাল মাটি, কয়লা এবং ইট পরিবহনের জন্য ভারী ট্রাক চলাচল করায় গ্রামীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। আইন অনুযায়ী আবাসিক এলাকা, কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লিনিকের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ কৃষিজমি, সবজি বাগান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে গড়ে উঠেছে এসব ভাটা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গোড়াই ইউপির সাবেক সদস্য আবদুল হাই, গোড়াইল গ্রামের বিল্লাল হোসেন, মীর দেওহাটা গ্রামের মোহাম্মদ আলী, ফজল মিয়া, আমান উল্লাহ, শহিদুর রহমান, ইউসুফ মিয়া এবং গাজীপুরের সফিপুরের সাইজউদ্দিন এসব এলাকায় ইটভাটা পরিচালনা করছেন। স্থানীয় গৃহবধূ হোসনে আরা বলেন, তারা ১৫০ শতক জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেন। ৪-৫ বছর আগে ওই স্থানে ইটভাটা নির্মাণ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ভাটার পরিধি বাড়তে থাকে। ইটভাটা হওয়ার আগে জমি থেকে তারা ভালো ফলন পেতেন। তিন বছর ধরে জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মীর দেওহাটা গ্রামের সমেজ উদ্দিন বলেন, গত বছর প্রতি শতাংশ জমিতে ২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলেন ইটভাটার মালিকরা। ওই ক্ষতিপূরণের টাকায় আবাদের খরচ ওঠেনি। তিনি জানান, ধান-তো নষ্ট হয়ই। গাছের ফল থাকে না। গাছের নারিকেল পরিপক্ব হওয়ার আগেই পড়ে যায়। অন্য সব গাছে ফল ধরলেও ছোট অবস্থায় ঝরে পড়ে। সেচ যন্ত্রের মালিক আমিনুর রহমান জানান, মল্লিকপাড়া ও সারেংবাড়ি এলাকায় চারটি সেচ প্রকল্প রয়েছে। ইটভাটার কারণে সব প্রজেক্টের ধানেরই ক্ষতি হয়েছে। ভাটা মালিক মোহাম্মদ আলী বলেন, ঈদের আগেই তার ভাটার আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। তার ভাটার কারণে কোনো ধান খেত নষ্ট হয়নি। অপর ইটভাটা মালিক আমান উল্লাহ জানান, অপেক্ষাকৃত নিচু চিমনির ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট হয়। তার ভাটার চিমনির উচ্চতা প্রায় ১৩০ ফুট-যার ধোঁয়া আকাশে মিলিয়ে যায়। টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর