শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

গ্যাস প্রণোদনা নেই, ধুঁকছে ঝালকাঠির লবণ শিল্প

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

গ্যাস প্রণোদনা নেই, ধুঁকছে ঝালকাঠির লবণ শিল্প

কালের বিবর্তনে এখনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে ঝালকাঠির লবণ শিল্প। ঝালকাঠির লবণ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে ব্যাংক ঋণ না পাওয়া এবং ঝালকাঠিতে গ্যাস লাইন না থাকার কারণে লবণ মিলগুলোর আধুনিকায়ন সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণোদনা পেলে আরও প্রসারিত হবে ঝালকাঠির লবণ শিল্প। ঝালকাঠি বিসিক কর্তৃপক্ষও বলছেন লবণ শিল্প ঝালকাঠিতে প্রসারিত হচ্ছে, বিসিক ঝালকাঠির লবণ শিল্প প্রসারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে যাবে। স্বাধীনতার পরপরই মূলত ঝালকাঠির লবণ শিল্পের বিকাশ ঘটতে থাকে। তখন কারখানাগুলোতে যাঁতা প্রক্রিয়ায় লবণ তৈরি হতো। ঝালকাঠির শহরের বাসন্ডা নদীর দুই তীরে পর্যায়ক্রমে গড়ে ১৪টি লবণের কারখানা। এরপরে দেশে আধুনিক ভ্যাকুয়াম লবণ মিল চালু হলে তার প্রভাব পরে ঝালকাঠিতে। কমে আসে লবণ মিলের সংখ্যা। তারপরেও দেশের ৮টি লবণ জোনের মধ্যে ৫টি জেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি লবণ জোনের ১৩টি মিলের ৮টিই ঝালকাঠিতে। এই ৮টির মধ্যে সেন্টিফিউজ ও ৩টি ও ট্রডিশনাল ৫টি। লবণ মিল মালিকরা জানান, ঝালকাঠিতে গ্যাসের লাইন না থাকায় তারা ভ্যাকুয়াম পদ্ধতির লবণ মিল চালু করতে পারছেন না। অন্যদিকে লবণ খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ না থাকায় লবণ মিলে কাক্সিক্ষত উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া প্রণোদনা না পাবারও অভিযোগ রয়েছে তাদের। লবণ মিল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ জানান, বিসিক থেকে করোনাকালীন সময় ঝালকাঠি লবণ মিলগুলোতে ৬০ লাখ টাকা  প্রণোদনা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ থাকলেও তারা পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষ বলেছেন ৬০ লাখ টাকা শুধু লবণ মিলের জন্য নয় ঝালকাঠির পুরো কুটির শিল্পেই বরাদ্দ হয়েছিল। ঝালকাঠির মিলগুলোতে দুই প্রকারের লবণ উৎপাদিত হয়। একটি হচ্ছে ভোজ্য লবণ (প্যাকেটজাত)  ও অন্যটি  ইন্ডাষ্ট্রি সল্ট (পশুখাদ্য)। মাসে ৩ হাজার ৫০০ টন ভোজ্য লবণ ও ৭ হাজার টন ইন্ডাষ্ট্রি লবণ উৎপাদিত হয়। প্রায় ৪০০ শ্রমিক ঝালকাঠি লবণ মিলগুলোতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা ট্রলার যোগে লবণ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার বড় জাহাজে বিদেশ থেকে আনা কেমিকেল ও কাচামাল কারখানায় খালাস করা হচ্ছে। এখান থেকে লবন যাচ্ছে পদ্মার এপারের সবকটি জেলাসহ কুষ্টিয়া, পাবনা ও সাতক্ষিরায়। বর্তমানে পদ্মা সেতু হওয়ায় ঢাকায়ও ঝালকাঠির লবনের বাজার সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। লবনের কাচামাল ও কেমিকেল আনা হয় কক্সবাজার, চট্ট্রগ্রাম ও ভারত থেকে। স্থানীয়রা জানান, লবণ শিল্প বিখ্যাত হবার কারনেই ঝালকাঠি বন্দর উপাধি পেয়েছিলো। তাই এই শিল্পের আরো অগ্রগতি হোক সে প্রত্যাশাই এখন সকলের। ঝালকাঠি লবন মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল শরিফ জানালেন, গ্যাস, ব্যাংক ঋন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঝালকাঠি লবন শিল্প প্রসারিত করা সম্ভব হবে।

ঝালকাঠি বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক পমা: সাফাউল করিম জানালেন, লবন শিল্পে প্রসারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া        হবে। এছাড়া পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকায়ও ঝালকাঠির লবণের বাজার তৈরি বলে জানান এ কর্মকর্তা।

 

সর্বশেষ খবর