শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে তৈরি হচ্ছে লবণ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে তৈরি হচ্ছে লবণ। ফলে লবণের গুণগত মান যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি ওই লবণ খেয়ে সৃষ্টি হতে পারে মানবদেহে কঠিন ও জটিল রোগ। সরেজমিন দেখা যায়, টেকনাফের চারটি ক্যাম্পের বসবাসরত ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বিভিন্ন পন্থায় তৈরি হওয়া বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে শ্রমিকরা তৈরি করছে লবণ। এতে আরও দেখা যায়, লবণ তৈরির বীজতলায় পলিথিন বা ত্রিপলের ওপর যে পানি রেখেছে সে পানিতে বর্জ্যরে ফেনা ভাসছে ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

যা পরে বাতাসে বা রোদে শুকিয়ে পানির সঙ্গে মিশে লবণে পরিণত হবে। যার কারণে ওই লবণের আসল রং নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ওই অঞ্চলে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। তাই লবণ শিল্পকে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি থেকে রক্ষা করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নিলে লবণ শিল্পের উৎপাদন চিরতরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে ভবিষ্যতে জীবিকা হারাতে পারে ৫ হাজার পরিবার, ২০০ জন লবণ ব্যবসায়ী, ৩ হাজার শ্রমিক, ৮০০ একর জমির মালিক। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এখান থেকে যে উৎপাদিত লবণ জাতীয় চাহিদা মেটাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বা কলকারখানায় যাচ্ছে। সে লবণ সব অঞ্চলের লবণের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। লবণের এমন অবস্থা জানলে এ এলাকার লবণ আর কেউ ক্রয় করতে চাইবে না। এ বিষয়ে টেকনাফ বিসিক লবণ শিল্প দফতরের কোনো মাথা ব্যথা না থাকলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় চাষি, লবণ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। এ বিষয়ে হ্নীলা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলী জানান, রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন টয়লেটের, রান্নাবান্নার, গোসলখানা ও অনেকের টয়লেট পরিষ্কারের পানি ড্রেনে ফেলে দেয়। যার ফলে ওই ড্রেনের মুখ বিভিন্ন খালের মাথায় সংযুক্ত থাকায় সব ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি খালে চলে যায়। খাল থেকে লবণ উৎপাদনের জন্য যে পানি উত্তোলন বা ব্যবহার হয়, তা রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত বলে জানা গেছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার এনামুল হক জানান, রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে হয়তো লবণ উৎপাদন হবে! সেগুলো খেয়ে মানবদেহে ফুসফুসের শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্ম রোগ, এমনকি ক্যানসারও হতে পারে।

সর্বশেষ খবর