ঝিনাইদহে টানা বৃষ্টির পর বৈরী আবহাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষিতে। শুকাতে শুরু করেছে জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানি। মরতে শুরু করেছে মরিচ ও বিভিন্ন সবজি গাছ। বর্তমান মাঠে ধান, মুলা, শিম ও লাউসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে। নিচু-জলাবদ্ধ এলাকার জমিতে সমস্যা সবচেয়ে বেশি। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে সব সবজির ফলন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। এ অবস্থায় জমির পানি দ্রুত নিষ্কাশন ও পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ আরও বলছে, বর্তমানে মাঠে মরিচসহ যেসব সবজি রয়েছে তা খরিপ-২ মৌসুমের। বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ মৌসুমের সবজির চারা রোপণ করা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহে এবার সময়মতো চারা রোপণ করতে পারেননি কৃষক। বেশির ভাগ কৃষক সেচের পানিতে চারা রোপণ করেছেন। জুনে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। আবার পরে টানা বৃষ্টি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটু আগেই গাছের জীবনকাল শেষ হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শীতের আগাম সবজি বাজারে আসতে শুরু করবে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর, ডাকবাংলা, বেড়াশুলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবজি চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। এসব এলাকায় কাঁচামরিচ, শিম, লাউ, পটোল, বেগুন, শসা, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ মৌসুমে ৫ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ৯২ হাজার ৯৪৫ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। সেখানে সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মরিচ ৫২৫ হেক্টর, লাউ ১২৯ হেক্টর, পটোল ৮২ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন শিম ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, খেতের পানি দ্রুত অপসারণ করা না গেলে মরিচ গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। মারা যেতে পারে অন্যান্য সবজি গাছও। এ জন্য জমির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে কার্বেনডাইজিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক। মরিচে কোথাও কোথাও পোকামাকড়ে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষক যদি পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করে তাহলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান পাবেন।