কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি কমার সঙ্গে এর তীরবর্তী এলাকায় তীব্র আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার মুরাদনগর উপজেলা সদরের চৌধুরীকান্দি, দিলালপুর ও জাঁহাপুর এলাকায় ইতোমধ্যে অন্তত ৩০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে শতাধিক পরিবার। গোমতী নদীর বেড়িবাঁধও রয়েছে ঝুঁকিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখনই ভাঙন ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে নদীগর্ভে চলে যাবে কয়েকটি গ্রাম ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা সদরের চৌধুরীকান্দি, দিলাপুর ও জাঁহাপুর এলাকার তীরবর্তী ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে ভিটাবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন আনোয়ার হোসেন, রিপন মিয়া, শহিদ মিয়া, রাজু মিয়া, সাজু মিয়া, আনিছ মিয়া, শরিফ মিয়া, শাহিনুর বেগম, সকিনা বেগম, হাছান মিয়া, নুরুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, হক মিয়াসহ অন্তত ৩০টি পরিবার। এ ছাড়াও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কবরস্থান, বৈদ্যুতিক খুঁটি, হাঁস-মুরগির খামার ও মাছের পুকুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বর্তমানে নদীর তীরবর্তী আরও বেশ কয়েকটি পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অনেকেই বসতভিটা থেকে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে গেছে অন্যত্র। আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১০ বছরে আমাদের বসতবাড়িসহ আশপাশের দেড় শতাধিক বাড়িঘর গোমতী নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছে। বাপ-দাদার ভিটেমাটির কোনো চিহ্নই এখন নেই। বর্তমানে যেখানে আছি সেটিও বিলীন হওয়ার পথে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিফাত উদ্দিন বলেন, নদীর পাড়ের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। তাদের সহযোগিতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, নদী ভাঙন রোধে আমাদের কোনো নিজস্ব বাজেট নেই। যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যে আমরা সেগুলোর তালিকা করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।