৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে হবিগঞ্জে চুনারুঘাট উপজেলার কেদারা কোর্ট এলাকায় দেশের ২৩তম বাল্লা স্থলবন্দরের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুন মাসে। নির্মাণের পর প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। যে কারণে ওই স্থলবন্দরকে ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, বন্দর চালু হলে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, বদলে যাবে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থা; সেটি না হওয়ায় হতাশ তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৬ সালে উপজেলার বাল্লা শুল্ক স্টেশনকে দেশের ২৩তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একটি আধুনিক স্থলবন্দর তৈরির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে উপজেলার কেদারা কোর্ট এলাকায় জমি অধিগ্রহণের পর অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত ভারত অংশে ইমিগ্রেশনসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না হওয়ায় এ বন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বাল্লা স্থলবন্দরের বাংলাদেশ অংশে উন্নত অবকাঠামো হলেও, সীমান্তের ওপারে ভারত অংশে কোনো প্রকার শুল্ক স্টেশন বা ইমিগ্রেশন সুবিধা নেই। যে কারণে বন্দরটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় মুড়া এলাকায় স্থল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা। সেখানে কোনো কার্যক্রমই দেখা যায়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে ত্রিপুরাসহ ভারতের সাতটি রাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য, মৎস্য, সিরামিক, স্যানিটারিসামগ্রী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং বিল্ডিং ম্যাটারিয়ালস রপ্তানিতে এ স্থলবন্দর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া এ বন্দর দিয়ে পিঁয়াজ, আদা-রসুন ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ভারত থেকে আমদানি সহজ হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন বলেন, বন্দর চালু হলে শুধু ব্যবসায়ীরা নন, সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তবে সেটি না হওয়ায় হতাশ তারা।
হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) সভাপতি সামছুল হুদা বলেন, আমরা অনেক ব্যবসায়ী এখানে ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে বসে আছি। এখানে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে। এক কথায় বন্দরটি চালু হলে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে যাবে। আর সেটা না হলে আমাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, বন্দরটি চালু না হলে সরকারের এত বড় প্রকল্প ও এতসব স্থাপনা কোনো কাজেই আসবে না।
বাল্লা স্থলবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম আপতত বন্ধ রয়েছে। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান বলেন, স্থলবন্দরটি বন্ধের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত কাগজপত্র পাইনি।