দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ উপজেলা কক্সবাজারের মহেশখালী। উপজেলা সদরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত নৌপথে। পর্যটন মৌসুমে যা বেড়ে হয় কয়েক গুণ। জরাজীর্ণ জেটির কারণে যাত্রী ও পর্যটকদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। স্পিডবোট বা ট্রলারে উঠতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের। জেটিতে নেই বসার জায়গা, পাবলিক টয়লেট। এবার পর্যটক সেবার কথা মাথায় রেখে নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক জেটিঘাট। যেখানে থাকবে যাত্রীদের বসার স্থান, নামাজের ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, রেস্ট রুম, গাড়ি পার্কিংসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা। মহেশখালী-কক্সবাজার নৌ-প্রবেশ পথ গোরকঘাটাতে জেটিটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, জেটি নির্মাণ শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। ৭০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত জেটিঘাট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান। তিনি বলেন, পর্যটন খাত উন্নয়নে এই জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে স্থানীয়রা যেমন নিরাপদে পারাপার হতে পারবেন তেমনি পর্যটকরাও সুবিধা পাবেন। মহেশখালী নৌরুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী প্রভাষক মাহবুবর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই দ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগব্যবস্থা খুবই খারাপ। আধুনিক জেটি হলে নৌযানে ওঠানামায় যাত্রীরা নিরাপত্তাবোধ করবেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আনছার উল্লাহ জানান, বর্তমানে যে জেটি আছে তা অত্যন্ত ছোট। যাতায়াত করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। নতুন জেটি পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য নিরাপদ হবে মনে করছি। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মূল প্রবেশদ্বার গোরকঘাটা জেটিটি ১৯৮৬ সালে নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৮৯ সালে এটি কিছুটা সম্প্রসারণ করে। জানা যায়, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মহেশখালীর জনসংখ্যা ৪ লক্ষাধিক। মহেশখালী পৌরসভা এবং আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই দ্বীপ প্রাকৃতিক ও প্রাণিসম্পদ এবং জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ। রাখাইন মন্দির, ঐতিহাসিক আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়ার মনোরম সমুদ্রসৈকত, ম্যানগ্রোভ, লবণের মাঠ, চিংড়ি চাষ, পানের বরজ মহেশখালীর পর্যটন খাতকে সুন্দর করেছে।
তেমনি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
মহেশখালীকে বাংলাদেশের একমাত্র স্বীকৃত ডিজিটাল আইল্যান্ড বলা হয়। এখানে রয়েছে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এল এন জি টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, টাউনশিপ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম জোন। এসব দেখতে পর্যটক ছুটে যান দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মহেশখালীতে।