লিচুর ভরা মৌসুম চলছে দিনাজপুরে। বিভিন্ন বাগান থেকে লিচু পেড়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এ সময়ে বাগানে বা বিভিন্ন গাছ থেকে ঝরে পড়া লিচু কুড়িয়ে রাস্তার পাশেই পসরা সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় শিশুরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ছুটি থাকায় এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে বেশী। দিনাজপুরে ঐতিহাসিক রামসাগর যাওয়ার সড়কে বাণিজ্যিক এলাকা পুলহাটের মাসিমপুরে রাস্তার পাশে এ দৃশ্য দেখা যায়। শুধু মাসিমপুর এলাকাতেই নয়, কসবা হয়ে ঘঘুডাঙ্গা, দিনাজপুর থেকে চিরিরবন্দর, বিরল, বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলার রাস্তার পাশে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এ এলাকার বেদানা এবং বোম্বাই লিচুর সুখ্যাতিও রয়েছে দেশজুড়ে। কয়েকজন শিশু জানায়, তারা সকালে উঠে বেরিয়ে পড়ে লিচু সংগ্রহে। যে বাগানেই লিচু ভাঙা হয় সেই বাগানেই তারা পৌঁছে যায়। লিচু কুড়িয়ে তারা জমিয়ে রাখে। পরদিন কুড়িয়ে রাখা লিচু নিয়ে পসরা সাজায় রাস্তার পাশে। এসব লিচুর দাম প্রতি বাটি জাত ভেদে ৩০, ৫০, ৭০ থেকে ১০০ টাকা। এসব লিচুর ক্রেতা পথচারীরাই। তারা জানায়, লিচু বিক্রির টাকায় কারো ইচ্ছা হাতঘড়ি কেনা, কারো পোশাক, পছন্দের খাবার, আবার কারো স্বপ্ন বাইসাইকেল কেনার। ঈদে বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার তালিকাও রয়েছে কারো। ঈদের ছুটিতে দাদাবাড়ি মাসিমপুরে এসেছে তামিম ইসলাম শুভ। সে জানায়, সকালে বাগানে লিচু ভাঙা হচ্ছিল। তখন লিচু কুড়িয়ে তা বিক্রির জন্য বিকেলে রাস্তার ধারে বসেছে।
সেলিম নামে আরেক শিশু জানায়- লিচু সে ৫০ টাকা বাটি হিসেবে বিক্রি করছে। সে আরো জানায়, লিচু কুড়ালে বাগান মালিকরা কিছু বলেন না। লিচু বিক্রি করে পছন্দের কাপড় কিনবে সে। মাসিমপুরের আকাশ জানায়, সে এ পর্যন্ত লিচু বিক্রি করে ৩৫০০ টাকা জমিয়েছে।
কসবা এলাকার আসাদুজ্জামান লিটন বলেন, এটা প্রতিবছরের চিত্র। শিশুরা আনন্দের সঙ্গে ঝরে পড়া বা ঝুট লিচু কুড়িয়ে রাস্তার ধারে বিক্রি করে। কমলপুর গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, লিচুগুলো কুড়িয়ে পাওয়া হলেও কোনো সমস্যা নেই। দাম কম। যেখানে বাজারে একশ চায়না থ্রি ২০০০ টাকা ও বেদানা লিচু ৯০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, সেখানে এই লিচু পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়।