দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার দুবলিয়া হঠাৎপাড়ার বাসিন্দা বৃদ্ধ আশরাফ আলী (৭৬) ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬০)। হতদরিদ্র এ দম্পতির দুই ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫), আক্কাস আলী (৩২) শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। কর্মক্ষমতা হারানো দুই ভাইয়ের সময় কাটে বিছানায় শুয়ে বসে। শেষ বয়সে প্রতিবন্ধী দুই সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বাবা-মা। মানবেতর দিন কাটছে তাদের। পরিবারটির আয়ের উৎস প্রতিবন্ধী ভাতা আর বৃদ্ধ বাবা-মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় হয়। অনেক সময় মা মানুষের কাছে সাহায্য চেয়ে ছেলেদের ভরণপোষণের চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা জানান, আশরাফ আলীর চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আলম আলী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকেন। একজন ছেলে মারা গেছেন। অসহায় দম্পতি এখন দুই প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়েই চরম কষ্টে দিন পার করছেন।
আলম আলী বলেন, আমি নিজেই গরিব মানুষ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোভাবে সংসার চালাই। তারপরও যতটুকু পারি বাবা-মা ও ভাইদের সাহায্য করি। ওদের চিকিৎসা আর নিয়মিত খাবার জোগানো সম্ভব হয় না। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন। স্থানীয় গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই পরিবারকে কিছু সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা পেলে তাদের জীবনমান কিছুটা হলেও বদলাতে পারে। খানসামা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তমিজুল ইসলাম বলেন, দুই প্রতিবন্ধী ভাই ভাতা পাচ্ছেন। তাদের ভরণপোষণসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, মানুষের দানের জমিতে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছে আশরাফ আলীর পরিবার। ঘরের কোণে দুই প্রতিবন্ধী ভাই শুয়ে আছেন। মা তাদের সেবাযত্নে ব্যস্ত। আলেয়া বেগম বলেন, স্বামী আর দুই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটে। যতটুকু পারি অন্যের বাড়িতে কাজ করি। মাঝেমধ্যে মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে হয়। বড় ধরনের সহায়তা পেলে একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারতাম।