ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কুমার নদ। দুই জেলাকে বিভক্ত করা এ নদের এপারে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া বাজার এবং অপরপ্রান্তে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর। এখানে একটি সেতুর অভাবে দুই জেলার হাজার হাজার মানুষকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বল্লভদী ইউনিয়নসহ সালথা উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন হাট-বাজারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে যান মুকসুদপুরে। অনেকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে ওই বাজারে। এ ছাড়া দুই জেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন নানান প্রয়োজনে নদ পারাপার হন। বর্ষা মৌসুমে নদ পারাপারে এ এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাকো। বিকল্প না থাকায় সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে হাজারো মানুষ। বিশেষ করে ফরিদপুর জেলার এ এলাকার মানুষ যোগাযোগব্যবস্থায় সমস্যার কারণে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে অনেক পিছিয়ে পড়েছেন। শুধু যাতায়াতই নয়, উৎপাদিত পিঁয়াজ, পাটসহ কৃষিপণ্য নিয়ে হাট-বাজারে যেতে ভোগান্তির শিকার হন। পণ্য বিক্রিতে ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। তারা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় বিধায় অনেকেই তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পান। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ঝামেলায় পড়তে হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, কুমার নদে পাকা সেতু না থাকায় তারা যুগের পর যুগ অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে যাতায়াত করে আসছে। কামারদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল, আলম, রাফি জানায়, বর্ষাকালে খেয়া নৌকায় করে কয়েক শ ছাত্রছাত্রী নদের ওপারের স্কুলে পড়তে যায়। বৃষ্টি হলে তারা স্কুলে যেতে পারে না। অনেকেই ভয়ে নৌকায় উঠতে চায় না।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, এ নদের ওপর দিয়ে একটি পাকা সেতুর। তারা বলছেন, অনেক নেতাই ভোটের আগে আশ্বাস দিয়েছেন, সেতু করে দেবেন, কিন্তু কেউই তা বাস্তবায়ন করেননি।
স্থানীয় আবদুল মাতুব্বর, করিম মাতুব্বর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা এ সমস্যার মধ্যে থাকলেও এ দুর্ভোগের দিকে কেউ নজর দেয়নি। নদের ওপর সেতু হলে তারা যাতায়াতসহ কৃষিপণ্য বিক্রিতে লাভবান হবেন। বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া ও মুকসুদপুর উপজেলার হাজারো মানুষের যাতায়াতের জন্য কুমার নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু তা বাস্তবায়নে কখনোই কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাফর মিয়া বলেন, ওই স্থানে আইডিভুক্ত রাস্তা নেই। তারপরও সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠাব। দেখে আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।