লালমনিরহাটে রোপা আমন ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আক্রমণ ঠেকাতে জমিতে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করেও সুফল পাচ্ছেন না কৃষক। সদ্য রোপণ করা চারা নষ্ট হওয়ায় দিশাহারা তারা। তাদের আশঙ্কা, পোকা নিয়ন্ত্রণ না করলে মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে কৃষি কর্মকর্তাদেরও মাঠপর্যায়ে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকের। জানা গেছে, এই পরিস্থিতি জেলার সদর, কালীগঞ্জ, আদিতমারী, হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায়। ধানের চারার গোড়ায় আক্রমণ করছে মাজরা পোকা। এতে গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি। কৃষকরা বলছেন, বারবার কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি ফলন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় এক লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার টন। তবে পোকার আক্রমণে ঝুঁকির মুখে লক্ষ্যমাত্রা। সদর উপজেলার বড়বাড়ীর কৃষক আবদুল হাকিম বলেন, মাজরা পোকার আক্রমণে তিন একর জমির অনেক চারা নষ্ট হয়ে গেছে। নানাভাবে চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না। কালিগঞ্জ উপজেলার শিয়াল খোওয়া গ্রামের আবু সাঈদ বলেন, চারা রক্ষা করতে অনেকবার কীটনাশক ব্যবহার করেছি। তাতে শুধু খরচ বাড়ছে, ফল পাচ্ছি না। কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ধান গাছের গোড়ায় পোকা ঢুকে গাছকে সাদা করে দিচ্ছে। এতে পুরো জমি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। হাতিবান্ধা উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষির প্রধান ভরসা আমন ধান। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সরকারি নির্দেশনা ও সহযোগিতা ছাড়া সামনে অন্ধকার। জেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইখুল আরেফিন বলেন, এখনো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কৃষক যদি আমাদের নির্দেশনা মেনে চলেন, তাহলে পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।