মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কের ভেষজ বাগান 'আরোগ্যকুঞ্জ' সম্ভাবনার আল্পনা আঁকলেও অবহেলা এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে নিজেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ভেষজ বাগানের নানান উপকরণ আড়ালে পাচার হচ্ছে।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলের স্থানে স্থানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভেষজ বাগান গড়ে তোলার লক্ষ্যে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কের ফুলবাড়ির সন্নিকটে ২ একর জমির উপর গত ২০০১-'০২ অর্থবছরে বনবিভাগের উদ্দ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে সৃষ্টি করা হয়েছিল ভেষজ বাগান 'আরোগ্যকুঞ্জ'। বাগানে রোপন করা হয়েছিল-অশোক, অর্জুন, আমলকি, কাঞ্চন, কুরছি, ঝাঁউ, চালতা, চালমোগরা, ছাথিয়ান, জয়ত্রী, পলাশ, বহেরা, বৈচি, নিম, মহুয়া, যঞ্জডুমুর, রক্তচন্দন, হরিতকি, নাগেশ্বর, বনবরই, বাশক, কালধুতুরা, ঘৃতকুমারি, মনকাটা, ঘৃতকাঞ্চন, আপাং, ইশ্বরমূল, কালমেঘ, গোলমরিচ, পুদিনা, শতমূল, হারজোড়া, কুমারিলতা, বন আলুসহ নানা জাতীয় ভেষজ বৃক্ষ ও লতাগুল্ম। মাটির গুণে উল্লেখিত জাতের ভেষজ গাছ ও লতাগুল্ম বেড়ে ওঠে আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে। বাগান সৃষ্টির সময় প্রাথমিক দেখভালের দায়িত্ব ছিল সিলেট বিভাগীয় বন সংরক্ষকের অধীনে। কিন্তু ২০০৬ সালে এ দায়িত্ব বর্তায় বিভাগীয় জীব বৈচিত্র অফিসের উপর। বাগানটি সফল হবার পর তার পরিসর বৃদ্ধি কিংবা এই বাগানকে মাইল ফলক গন্যকরে অন্যত্র ভেষজ বাগান সৃষ্টির কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন কর্মকর্তা বলেন, দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক বাজারে ভেষজ বৃক্ষ এবং লতাগুল্মের বাণিজ্যিক চাহিদাকে ধারণায় রেখে পরীক্ষামূলকভাবে বাগানটি তৈরি করা হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে এটি ছিল খেয়ালি পদক্ষেপ। বর্তমানে ভেষজ বাগানের কোন কোন বৃক্ষে আগামরা ( টপডাইং) রোগ দেখা দিচ্ছে পরিচর্যার অভাবে। লতাগুল্মকে ঘিরে ফেলেছে বনের আগাছা। অন্যদিকে ভেষজ বৃক্ষের নানান উপকরণসহ লতাগুল্ম আড়ালে পাচার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন হারবাল কোম্পানীর স্থানীয় এজেন্টরা এগুলো কিনে নিচ্ছে বলে একটি সূত্র দাবি করছে। এ ব্যাপারে জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ বিভাগের ডি,এফ,ও এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন কিছু জানি না।
বিডি-প্রতিদিন/১২ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ