নাটোরের নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করার খবর প্রচারিত হলে নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও নির্যাতন নিয়ে বেশ কয়েকটি খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশ সুপার সংবাদকর্মীদের সাথে নিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময়ে ওসির বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। পরে সমসখলসি গ্রামের নির্যাতিত রাশিদা বেগম, শফিকুল ইসলাম লালু ও সোহেল খান ওসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে নাটোরের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ওসির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করছেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট দাখিল করবেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্ত এর আগে একবার নাটোর সদর থানার এসআই থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ ওঠে। তখন তাকে নাটোর জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ খুলনা জেলার কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক তদবিরে তার শ্বশুরবাড়ি নাটোরে এসে গত বছরের ১২ আগষ্ট নলডাঙ্গা থানার ২১তম ওসির দায়িত্ব নেন। যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় সাধারণ মানুষের ওপর চাঁদাবাজি ও নির্যাতন।
ভুক্তভোগীরা জানান, কোন মামলা না থাকলেও মামলা রয়েছে বলে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা অভিযোগে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জামায়াত-শিবিরের নাশকতা, হেরোইন, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা সহ বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়। টাকা না দিলে ওই সব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করার হুমিক দেন সুবীর দত্ত। এসব মামলা থেকে রেহাই পেতে এবং সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই তার চাহিদা মতো টাকা দিতে বাধ্য হন।
সরেজমিন নলডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, ওসি সুবীর দত্ত এখন সাধারণ মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বলেন, পুলিশ জনগনের সেবক, পুলিশের কাছে সাধারণ মানুষ হয়রানি হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আগামী দিনে নাটোর জেলার কোন মানুষ পুলিশের হাতে এ ধরনের হয়রানীর শিকার হলে ভুক্তভোগী যেন বিষয়টি তাৎক্ষণিক সরাসরি তাকে অবগত করেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ জানুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ