মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সোন্দালপুরে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন আহত রবিউল হোসেন দিদারকে (২০) উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভূক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন জানান, কিছুদিন আগে সোন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহেনা আক্তারের স্বামী রুহুল আমিন মানিকের একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এনিয়ে গত শনিবার রাত আটটার দিকে বারিপুকুরপাড় এলাকা থেকে সোহাগ ও খোকন নামে স্থানীয় দুই বখাটে অজিউল্লাহর ছেলে দিদারকে জোরপূর্বক তাদের মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর পরিত্যক্ত বাড়িতে দিদারের হাত, পা ও মুখ বেঁধে সোহাগ, খোকন, বুবুল, সাদ্দাম ও আক্তার চৌকিদার কিরণসহ ৮-১০ জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তাকে দফায় দফায় ৩-৪ ঘন্টা ধরে মারধর করে।
আহত দিদার হোসেন জানায়, সন্ত্রাসীরা তার মুখের ভেতর কাপড় ডুকিয়ে দেয়ায় আত্মরক্ষার্থে সে চিৎকার করতে পারেনি। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তার শরীরে গরম পানি ডেলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, দিদারকে যেখান থেকে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা সেখানকার লোককজন তার বাড়িতে খবর দিলে তারা দিদারের সন্ধানে বের হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন দিদারকে নির্জন বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন চালানোর খবর পেয়ে বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রুমিকে অবহিত করেন। এরপর বিক্ষুব্ধ লোকজন ঘটনাস্থলে দিকে আসছে এমন খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা দিদারকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পরিত্যক্ত বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যায়। মধ্যরাতে লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, দিদার একজন পরিবহণ শ্রমিক। বাড়ি থাকাকালীন সময় নিজের দুটি পাম্প মেশিনে জমিতে পানি সেচের কাজ করে সে। ইউপি সদসস্যের স্বামীর মোটরসাইকেল চুরির দিন দিদার ঢাকায় তার বাবার কাছে ছিল। এর আগে এলাকায় তার বিরুদ্ধে খারাপ কোন অভিযোগ নেই। তারা বাবা একটি প্রতিষ্ঠানে দারোয়ান হিসেবে কাজ করেন।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত মহিলা ইউপি সদস্য শাহেনা আক্তার জানান, স্বামীর মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে তিনি সোহাগ সহ স্থানীয় কয়েকজন যুবককে জানালে তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিদারকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় বলে শুনেছে তিনি। তবে, তাকে পিটিয়ে আহত করেছে অন্য লোকজন।
এ ব্যপারে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তার হোসেন জানান, মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে কিশোর রবিউল হোসেন দিদারকে আটকে রেখে মারধর করার বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, এ ব্যপারে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন