সাতক্ষীরার আশাশুনিতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে এলাকা। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজয়ের ঘটনায় হিন্দু পরিবারের উপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ ও এলাকাবাসী।
আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু কর্তৃক হিন্দু পরিবারের উপর হামলা ও আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে সড়যন্ত্রমূলক ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনের প্রতিবাদে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে আশাশুনি উপজেলার ঠাকুরাবাদ, বলাবাড়ীয়া, গাইয়াখালি ও হাঁসখালি এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক রমেশ চন্দ্র বৈরাগী, বলাবাড়ীয়া ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তরুন মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক রবিন্দ্রনাথ সানা, তুলশিপদ বাইন, শিখা রানী মন্ডল, উত্তারা রানী সানা প্রমুখ।
এসময় বক্তরা বলেন, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিম রেজা মিলনের নিকট পরাজিত হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালাচ্ছে। নির্বাচনের আগেও তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতন চালান। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম পিন্টুর বন্দুকের বাটের আঘাতে গুরুতর আহত হন তুলশি পদ বাইনসহ আরও অনেকে। নৌকার প্রার্থী অ্যাড. শহিদুল ইসলাম পিন্টুকে সমর্থন না করে তারা যুবলীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম রেজা মিলনের পক্ষে ভোটে কাজ করায় পিন্টুর ভাতিজা সুমনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এলাকায় এাস সৃষ্টি করে। সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালায়। এলাকার সংখ্যালঘুরা এখন চরম আতংকে রয়েছেন।
মানবন্ধন শেষে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সহিংসতা প্রতিরোধে তারা সচেতন রয়েছেন। নির্বাচন পরবর্তী জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে শহিদুল ইসলাম পিন্টুর নেতৃত্বে একটি মহল বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে। এলাকায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে তিনি পুলিশের সহায়তা কামনা করেন। নতুন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নব নির্বাচিত আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুফিকুল সরদার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি এবং আশাশুনি উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি স ম সেলিম রেজা সেলিম, অসীম সরকার মন্ডল, কাত্তিক সরকার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, অ্যাড. শহিদুল ইসলামের বাবা আব্দুর গফ্ফার ১৯৭১ সালে পিস কমিটির কেশিয়ার ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লুটপাট ও মা-বোনের উপর নির্যাতনের কারনে তার ছেলে নৌকা প্রতীক পাওয়ায় এলাকাবাসী ও হিন্দু সম্প্রদায় মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। সে কারনে নির্বাচনে তার পরাজয় হয়েছে। আজ স্বাধীনতা দিবসেও তিনি শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাননি। এটা দু:জনক ঘটনা।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ