পার্বত্যাঞ্চলে শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী মারমা সম্প্রদায়ের জলোৎসব (সাংগ্রাইং)। মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ‘জলোৎসব’। জলকেলি দৃশ্য বেশ উপভোগ্য বলে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটেছে উৎসবস্থলে। মারমা ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘রিলংপোয়ে’। জলখেলার জন্যে এরা আগে থেকে প্যান্ডেল তৈরি করে। ঐ প্যান্ডেলে মারমা যুবক-যুবতীরা একে অপরের প্রতি জল ছিটিয়ে কাবু করার প্রতিযোগিতায় সামিল হয়। এসময় কৃত্রিম ভারি বর্ষণ হয় অনুষ্ঠানস্থল জুড়ে। উৎসবের আনন্দ জলে সিক্ত হয় মারমা তরুণ-তরুনীরা। আনন্দ-উল্লাসে নেচে গেয়ে পার করে দিন।
মারমা সম্প্রদায় ছাড়াও উৎসবে যোগ দিয়ে ছিল চাকমা, ত্রিপুরা, খিয়াং, গুর্খা, অহমিয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, উসুই, লুসাই, চাক, রাখাইন, খুমী, বমসহ বাঙালি জনগোষ্ঠীর হাজার হাজার নারী-পুরুষ। শিশু, কিশোর, তরুণ, তরুণীসহ সব বয়সের মানুষ সমবেত হয় এ উৎসবে। রাঙামাটির মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইংকে ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে ওঠেছে পাহাড়ি জনপদ।
পার্বত্য তিন জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের পদচারণায় উৎসবের নগরীতে পরিনত হয় পুরো কাপ্তাই উপজেলা। সকাল থেকে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ চট্টগ্রাম থেকেও মানুষে ঢল নামতে শুরু করে জলোৎসবস্থলে। বেলা বাড়ার সাথে সাখে জন সমুদ্রে পরিনত হয় চন্দ্রঘোনা চিৎমরম এলাকা। পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলন মেলায় জমে উঠে সাংগ্রাইং উৎসব।
এদিকে, পার্বত্যাঞ্চলের বৈসাবি ও বর্ষবরণ উৎসব শেষ হতে না হতে আবারও উৎসবমুখর রাঙামাটি।
শুক্রবার বেলা ১১টায় আনন্দ- উল্লাস আর উৎসমুখর পরিবেশের মধ্যেদিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় চন্দ্রঘোনা চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার মাঠে মারমা সম্প্রদায় তিন দিনব্যাপী সাংগ্রাইং উৎসব অনুষ্ঠানিক উদ্ধোন করেন সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, কাপ্তাই জোন কমান্ডার মো. কামাল উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারেকুল হাসান, জেলা পরিষদের সদস্য মুছা মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ এপ্রিল ১৬/ সালাহ উদ্দীন