বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলী টহল ফাঁড়ির পঁচাকোরালীয়া ও নাপিতখালী বিলের মধ্যবর্তী আব্দুল্লারছিলা এলাকার গহীন অরণ্যে লাগা আগুন দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার রাতে নিয়ন্ত্রনে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিই মধ্য রাতে শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাটে ফিরে এসেছে। এই আগুনে বন বিভাগের হিসেরে ৮ দশমিক ৫৫ একর বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এঘটনায় জড়িত ৬ জেলে-মৌয়ালকে চিহ্নিত করতে পেরেছে সুন্দরবন বিভাগ। তবে এখনো তাদের নামে মামলা বা আটক করা হয়নি।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সুন্দরবনের আব্দুল্লারছিলা এলাকার গহীন অরণ্যে এই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়।
এদিকে আগুনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যেদের কমিটি গঠন করেছে সুন্দরবন বিভাগ। সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েতকে এই তদন্ত কমিটির প্রধান করায় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ তদন্ত নিয়ে সুন্দরবন সন্নিহিত লোকালয়ের মানুষের মনে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। সুন্দরবনে ধানসাগর স্টেশনে প্রতি বছর আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে বন সংগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগের আঙ্গুল খোদ এসিএফ বেলায়েতের দিকে।
কয়েকটি অসাধু মৎস্য শিকারি চক্র প্রতিবছর বনে আগুন লাগিয়ে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে তারা আগুন লাগিয়ে বন পরিষ্কার করে মাছের বিল তৈরী করে। বর্ষা এলেই শুরু হয় ওই চক্রের মাছ ধরার উৎসব। বন কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই চক্রের কাছে মৌসুম ভিত্তিক অলিখিত ইজারা (লিজ) দেয় ওই বিলগুলো। কারেন্ট জাল পেতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করা হয়। প্রতি মৌসুমে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হলেও সরকারের ঘরে একটি টাকাও রাজস্ব জমা পড়ে না। পকেট ভারি হয় সুন্দরবনের কর্মকর্তাদের। মঙ্গলবার রাতের আব্দুল্লারছিলায় বনে আগুনের ঘটনাটি তারই অংশ। একাজের মাস্টার মাইন্ড এসিএফ বেলায়েতকে তদন্ত কমিটির প্রধান করায় তাই নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ তদন্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেছেন, আগুন বৃহস্পতিবার রাতে নিভে গেছে। তারপরও আরো ২/৩ দিন ধরে এখানে নজরদারী ও পানি দেয়া হবে। এই আগুনে বন বিভাগের হিসেরে ৮ দশমিক ৫৫ একর বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এঘটনায় জড়িত ৬ জেলে-মৌয়ালকে চিহ্নিত করা গেছে। রবিবার তাদের নামে মামলা করা হবে। সর্বশেষ এই অগ্নিকান্ডের মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ষ্টেশন এলাকায় ফের আগুনের ঘটনায় চুপসে গেছেন বনকর্মকর্তারা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ এপ্রিল ১৬/ সালাহ উদ্দীন