বাগেরহাটের মংলায় চাঞ্চল্যকর পৌর যুবদলের সভাপতি আব্দুল হালিম তালুকদার (৪০) হত্যা মামলায় এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান খান এ রায় দেন। রায়ে দন্ডিত মো. নূরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. নূরুজ্জামানা বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের আব্দুল জলিল মাস্টারের ছেলে। জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মংলা শহরের রিমঝিম সিনেমা হলের পেছনে মংলা পৌরসভার কবরস্থান রোডের প্রয়াত নূর মোহাম্মদ তালুকদারের ছেলে মংলায় পৌর যুবদলের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হালিম তালুকদারসহ কয়েকজন ব্যাটমিন্টন খেলছিলেন। এসময় দুটি রিকশা যোগে চারজন খেলার মাঠে এসে যৌথ বাহিনী পরিচয়ে হালিমকে ডাক দেয়। হালিম খেলা বন্ধ করে তাদের দিকে এগিয়ে গেলে আসামী নূরুজ্জামান তার কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা নূরুজ্জামানকে ধাওয়া করে অস্ত্র ও গুলিসহ ধরে যৌথ বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।
ঘটনার পরদিন ১৬ ডিসেম্বর নিহতের ভাই মোজাম্মেল হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে নূরুজ্জামানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মংলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাগেরহাট জেলা সিআইডি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম জোয়াদ্দার ২০০৮ সালের ১৮ মে তদন্ত শেষে মংলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যার ইদ্রিস আলী ইজারাদার, মংলা পৌরসভার সাবেক মেয়র শেখ আদুস সালাম, মংলা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইজারাদারসহ আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া মো. নূরুজ্জামানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিদের সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে ওই দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা।
তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিগত ২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের আইন শাখা -১ এর (সারক নং- স্বম(আইন ১) প্রত্যাহার ১২/১০ (২৩তম সভা)/৬২০৩) এক সভার সিদ্ধান্তে মামলার আসামীদের অব্যহতি দিতে আদালতের কাছে আবেদন করেন। মামলা চলাকালে আদালত ওই আবেদনটি আমলে নিয়ে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তি দেওয়া এক মাত্র আসামী নূরুজ্জামান বাদে অন্যদের অব্যাহতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিচার কাজ শুরু করে। মামলার ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী নুরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব