গ্রীষ্মকাল। খরতাপ ও অনাবৃষ্টির কারণে প্রায় মরুভূমিতে রূপ নিয়েছে পার্বত্য অঞ্চল। নদীর বুকে চর জেগে মৃত প্রায় সকল খাল, বিল, পুকুর ও নদী। টিউবওয়েল, রিংওয়েল ও নলকূপে উঠছে না পানি। গত এক মাসের গড় তাপমাত্রা ৪০-৪৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হচ্ছে না বৃষ্টিপাত। এরমধ্যে খাগড়াখড়ির লামায় কৃত্রিম বনায়ন, বাগান ও জুম চাষের জন্য বাগান মালিক ও স্থানীয়রা পাহাড় পরিষ্কার করতে সহজ উপায় হিসেবে বেচেঁ নিচ্ছে পাহাড়ে আগুন দেয়া।
বিস্তৃর্ণ পাহাড়ি এলাকায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে নানান মূল্যবান বনজ ও ঔষুধি গাছ। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে কয়েক হাজার প্রজাতির জীবজন্তু। অসতর্কতার কারণে অনেক সময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুড়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি, সৃজিত ফলের বাগান ও সবজির মাঠ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, পাহাড়ের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে তা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে রূপ নেবে।
স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় কোন এক জায়গায় আগুন লাগিয়ে দিলেই তা ছড়িয়ে পড়ে কয়েক মাইল এলাকায়। গত বছর লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মিরিঞ্জা এলাকায় স্কাই রাবার বাগানের আগুন দিলে তা ছড়িয়ে পড়ে প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায়। পুড়ে যায় ১৩টি বসতবাড়ি। আগুনে পুড়ে ১৮টি রাবার, ৩টি মিশ্র ফলের বাগান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় কয়েক কোটি টাকা।
পাহাড়ে নিয়ম না মেনে আগুন দেয়ার বিষয়ে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রিজার্ভ ও সংরক্ষিত এলাকায় যদি কেউ আগুন দেয় তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে পারি। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় জুমিয়ারা খাস জায়গা বা ব্যাক্তি মালিকানা জায়গায় জুম চাষ ও বনায়ন করার উদ্দেশ্যে যদি আগুন দেয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন উপজেলা বা জেলা প্রশাসন। সেক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা চাইলে আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। যেভাবেই আগুন দেয়া হোক না কেন তা পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য যথেষ্ট হুমকি স্বরূপ।
বিডি-প্রতিদিন/২১ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব