বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে দু’দফা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে নাংলী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও দুই বনকর্মীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকৃত বনকর্মীরা হলেন একই টহল ফাঁড়ির দুই বোটম্যান মোবারক হোসেন ও পলাশ মজুমদার।
শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, সুন্দরবনের পঁচাকোরালীয়া ও নাপিতখালী বিলে অবৈধ্য মাছ চাষ করতে মৎস্য চাষিদের কাছ থেকে লাখ-লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল পোড়ানোর নেপথ্যের অভিযোগে ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহমুদ হাওলাদারকে ‘প্রাইজ পোস্টিং’ দেয়া হয়েছে।
তাকে ধানসাগর স্টেশন থেকে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে চাকরির লোভনীয় স্থান চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে বদলী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী টহল ফাঁড়ি এলাকার পঁচাকোরালীয়া ও নাপিতখালী বিলের মধ্যবর্ত্তি আব্দুল্লার ছিলার গহীন অরন্যে এ মাসে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে দু’দফা নাশকতার আগুনে পুড়ে যায়। ১২ এপ্রিল মধ্যরাতে ধরিয়ে দেয়া আগুন তিন দিন ধরে জ্বলতে থাকে। এই আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার মাত্র চার দিনের ব্যবধানে একই এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১৮ এপ্রিল ভোরে ফের আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে।
নাশকতার এই আগুনের ঘটনায় সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের আদালত ও শরণখোলা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা দুটিতে শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজাহান আলী হাওলাদার ওরফে শাহজাহান শিকারীকে প্রধান আসামীসহ স্থানীয় শাসকদলের ১১ নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়। তবে, শরণখোলা থানা পুলিশ সুন্দরবনে নাশকতার আগুনের মামলার কোন আসামীকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন এলাকায় বনকর্তারা প্রতিবছর সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের বিভিন্ন বিল অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে মাছ চাষ করতে বনসন্নিহিত লোকালয়ের মৎস্য চাষীদের সুযোগ করে দেয়। এর মাধ্যমে কয়েকটি অসাধু মৎস্য শিকারি চক্র বর্ষা মৌসুম আসার আগে বিলগুলো পরিস্কার ও সহজে কারেন্ট জাল পাতার স্থানগুলো প্রস্তুত করতে পরিকল্পিত ভাবে সংরক্ষিত সুন্দরবনে আগুন ধরিয়ে দিয়ে থাকে।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ এপ্রিল ২০১৬/ হিমেল-০৭