মেহেরপুরের গাংনীর ঝিনেরপুলপাড়া এলাকা থেকে মিলন হোসেন (৩৫) নামে এক কুয়েত প্রবাসীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে ঝিনেরপুলপাড়া সাইন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে গাংনী থানা পুলিশ। নিহতর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি হাতুড়ি, মোটারসাইকেলের ভাঙা কিছু অংশ ও পড়ে থাকা রক্তের আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে রবিবার রাত ৮টার দিকে ঝিনেরপুলপাড়া সাইন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে রক্তমাখা অবস্থায় মিলনের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। মোটরসাইকেলটি নিহত মিলনের বলে তার পরিবার সনাক্ত করেছে। নিহত মিলন হোসেন মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামবাসীর ধারণা, পরকীয়া প্রেমের বাধা দুর করতে তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
লাশ উদ্ধারের পরপরই মিলনের পরিবারের লোকজন নিহত মিলনের স্ত্রী মানুছুরা খাতুন ও তার ভাইরা ভাই আব্দুর রশিদকে আটক করে বেধড়ক মারপিট করে। পুলিশ খবর পেয়ে মিলনের স্ত্রী ও ভাইরা ভাইকে উদ্ধার করে গাংনী থানা হেফাজতে নিয়েছে। পরকীয়া প্রেমিক গাংনী সিনেমা হলপাড়ার মোজাম হোসেন ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছে ।
নিহত মিলনের পিতা আব্দুল হামিদ জানান, তার ছেলে মিলন হোসেন কুয়েত প্রবাসী ছিল। কিছুদিন আগে সে দেশে ফিরে গাংনী বনবিভাগ পাড়ায় বাসা
ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। গত রবিবার বিকাল ৫ টার দিকে মিলন শ্যামপুর থেকে গাংনীর উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। মিলনের স্ত্রী মানছুরা খাতুন আজ সোমবার সকালে মিলনের বাবাকে মোবাইলে জানায় মিলন রাতে বাড়ি ফিরেনি। এরপর সকালে গাংনীর ঝিনেরপুর পাড়া থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
মিলনের পিতা আব্দুল হামিদ অভিযোগ করে আরো জানান, তার ছেলের বউয়ের সাথে স্থানীয় মোজাম নামে এক ব্যবসায়ীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমে বাধার কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন বলেন, পরকীয়া প্রেমের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতের স্ত্রী মানুছুরা ও ভাইরাভাই আব্দুল রশিদকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, লাশর ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে।
গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এস আই) শংকর কুমার জানান, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত ৮ টার দিকে ঝিনেরপুলপাড়া সাইন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রক্তমাখা একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পরে আজ সোমবার সকালে আবারো স্থানীয়দের খবরে ভিত্তিতে একই এলাকা থেকে মোটরসাইকেল মালিক মিলনের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের পাশে একটি হাতুড়ি, মোটরসাইকেলের ভাঙা কিছু অংশসহ রক্তের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ এপ্রিল ২০১৬/শরীফ