পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার সকালে উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের শত শত নারী-পুরুষ এ কর্মসূচি পালন করেন।
পূর্বটিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা, কৃষক রাজ্জাক মুসল্লী, নুরুদ্দিন খান, রশিদ হাওলাদার, আপ্তের হাওলাদার, মো.অলিউল্লাহ, মাকসুদ তালুকদার, হাসান মোল্লা, জাহানারা বেগম, মোখলেসুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় সাধারণ কৃষকরা প্রয়োজনে জীবন দিয়ে তাদের ভিটেমাটি ও কৃষি জমি রক্ষার ঘোষণা দেয়।
বর্তমানে ওই ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের নয়টি গ্রামে শত শত কৃষক ব্যাপক আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্য দিয়ে সময় কাটাচ্ছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, সেনা কল্যান সংস্থা যে জায়গা নেয়ার জন্য সীমানা চিহ্ন দিয়েছে সেখানে কৃষিজমি-বাড়িঘরের পাশাপাশি ১০ টি স্কুল, ১৫ টি মসজিদ, চারশ’ বাড়িঘর, চারটি মাদ্রাসা, দেড়শ’ গভীর নলকুপ ও শত শত কবরস্থান রয়েছে। কিছুদিন আগে টিয়াখালী ইউনিয়নের ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিরাট এলাকা নিয়ে সেনা কল্যান সংস্থার লোকজন মাপজোক করে লাল ফ্লাগ বসিয়ে দেয়। এরপর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভিটেবাড়ি থেকে চাষের জমি হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে জনমানবহীন চরাঞ্চলে এসব প্রকল্প করার দাবী জনিয়েছে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় শত শত মানুষ। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
ওই ইউনিয়নের নুরুদ্দিন খান বলেন, আমাদের বাড়িঘরে আমরা থাকতে চাই। সরকারের জায়গা দরকার থাকলে দিবো। কিন্তু কোন সংস্থাকে জায়গা দেবো না।
একই এলাকার রাজ্জাক মুসল্লী বলেন, 'রোজেরডা রোজ কামাই কইর্যা খাই। বান্দের (বাঁধ)বাইরে থাহি। সেনা কল্যানকে এই জমি দেওয়া যাইবেনা।'
শতবর্ষী কৃষক কাদের মোল্লা জানান, সরকার পোর্ট করছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে, আমরা জমি দিছি। কিন্তু কোন বেসরকারি সংস্থাকে কৃষি জমি কিংবা বসতভিটার জমি দেয়া হবেনা। জমি দিলে আমরা যাব কোথায়। থাকব কোথায়। আমরা আজ অসহায়।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা জানান, এলাকার মানুষ সরকারের কাছে আবেদন করেছে তাদের জমিজমা যেন কোন বেসরকারি সংস্থা না নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী সাংবাদিকদের জানান, যা কিছুই করা হবে জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা কিংবা বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই হবে। এখানে কোন ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল ২০১৬/ হিমেল-২০