সিরাজগঞ্জে ফের গবাদি পশুর রোগ অ্যানথ্র্যাক্স বা তড়কা রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই সপ্তাহে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও কামারখন্দে ৩৫জন নারী-পুরুষ ও শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
অ্যানথ্র্যাক্স রোগে আক্রান্ত গরু ও ছাগলের মাংস কাটা ছেড়া এবং খাওয়ায় ফলে এ রোগ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য ও প্রাণি সম্পদ বিভাগ জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর রোগতত্ব গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি দল গত তিনদিন ধরে আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রাথমিকভাবে এটিকে এ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগ বলে নিশ্চিত করেছেন।
আক্রান্তরা হলো-কামারখন্দের জামতৈল গ্রামের সনেকা (৩০), বানী খাতুন (২৮), শাহিদা (৩০), সোহান (১২), কছির আলী (৬০), সাহেরা (৪৫), আসান শেখ (৪৫), লিলি বেগম (৫৬) ও আর্জিনা (৩), আদেল প্রামানিক (৪৫), জাকির (৪০), ছালাম শেখ (৪৫), শফিকুল ইসলাম (৪২), হোসনেয়ারা (২৫), রুবেল (১৫), ছালেকা (১৪), রাবেয়া (১২), রফিক (৩৫), আলম আকন্দ (৩৬)। শাহজাদপুর উপজেলার চর কৈজুরী গ্রামের মোজাম্মেল (৫০), মোছা: বিউটি (৩২), পূর্ব চর কৈজুরীর আজিম প্রাং (৪৮), বড় বাছড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৩০), হাওয়া বেগম (২৪), রিদয় ইসলাম (১১) ও জয়পুর গ্রামের শফিক (২০), সেলিম (১২) জুয়েল, নাজমা (৩৫), জাফর আলী (৩২), পারুল (১৬), উজ্জল (১০), জহির প্রাং (২৭) এবং মহির প্রাং (৩০)।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার ডা. ইমান আলী জানান, মাসখানের মধ্যে শাহজাদপুরের কৈজুরী ইউনিয়নের ৩-৪টি গ্রামে স্থানীয়রা অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত কয়েকটি গরু ও ছাগল জবাই করেন। ওই মাংস যারা কাটাকাটি করেছে তারাই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। একই ভাবে কামারখন্দেরর জামতৈল এলাকায় স্থানীয়রা বুদ্ধ সাহার একটি অসুস্থ গরুসহ পর পর তিনটি অসুস্থ গরু জবাই করে ভাগাভাগি করে নেন। এগুলোরও মাংস যারা কাটাকাটি বা নাড়া-চাড়া করেছে তারাও এরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম আক্রান্ত এলাকায় কাজ করছে এবং আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করছে। এছাড়াও জনগনকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর রোগতত্ব গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আই,ই,ডি,সি,আর) প্রতিনিধিদল আক্রান্ত এলাকাগুলোতে গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলেছেন এবং পরীক্ষার জন্য আক্রান্ত পশুর মাংস-মাটিসহ বিভিন্ন নমুনা নিয়ে গেছেন।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আকতারুজ্জামান ভুইয়া জানান, স্থানীয় অসচেতন ব্যক্তিরা প্রাণি সম্পদ বিভাগের অগোচরে অসুস্থ্য প্রাণি জবাই করেছে। ওই প্রাণির মাংস কাটাছেড়া ও সেবনকারীদের মধ্যে এ্যানথ্রাক্স রোগ দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে প্রাণি সম্পদ বিভাগ জেলাব্যাপী রিং ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচী চলছে। এছাড়াও অসুস্থ্য প্রাণি জবাই ও খাওয়া বন্ধ, মৃত গরুকে ৬ ফুট মাটির নিচে পুতে রাখাসহ জনসচেতনতা তৈরীতে প্রশিক্ষণ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ মে ১৬/ সালাহ উদ্দীন