আজ ইয়াসমিন ট্রাজেডি দিবস। সারাদেশে আলোড়িত দিনাজপুরের সেই ট্রাজেডি আজও সারা দেশের মানুষকে শিহরিত করে। ১৯৯৫ সালে পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ইয়াসমিনের ধর্ষণ ও হত্যার বিচার হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দোষী তিন পুলিশের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। ইয়াসমিন ট্রাজেডির আজ ২১তম বার্ষিকী। এ দিনে দেশব্যাপী পালিত হয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস।
প্রতি বছর দিনাজপুরে সর্বদলীয়ভাবে দিবসটিকে পালনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৪ আগস্ট দিনাজপুর শহরের প্রতিটি ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও শোক র্যালি। দিবসটি পালনে সম্মিলিত নারী সমাজ, মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ইয়াসমিনের মা শরিফা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, এ ঘটনার পর আমাকে সাহায্য সহযোগিতা অনেকে করেছেন। তবে আমাকে একটি চাকুরি দিতে চেয়েও কোন সরকারতিা দেয়নি।
১৯৯৫ সালের এ দিনে দিনাজপুরে একদল বিপথগামী পুলিশের হাতে তরুণী ইয়াসমিন নিমর্মভাবে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়। এ বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে-বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দিনাজপুরের মানুষ। প্রতিবাদী মানুষকে লক্ষ্য করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরে ১৪৪ ধারা (কার্ফ্যু) জারি করা হয়। শহরে নামানো হয় বিডিআর। ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি ৩টি আদালতে ১শ’ ২৩ দিন বিচার কাজ শেষে ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মতিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে আসামি পুলিশের এএসআই মঈনুল, কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার ও পুলিশের পিকআপ ভ্যান চালক অমৃত লাল বর্মণের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ বিধান '৯৫-এর ৬ (৪) ধারায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন। আলামত নষ্ট, সত্য গোপন ও অসহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এএসআই মঈনুলকে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
চাঞ্চল্যকর ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় ৮ বছর পর অর্থাৎ ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ