রাজধানীর মিরপুর সাইক ইনস্টিটিউটের ছাত্রী আফসানা ফেরদৌস আত্মহত্যা করেছেন এমন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। আসফানা আত্মহত্যা করেনি, তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিনসহ তার কয়েকজন বন্ধু মিলে আফসানাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে নিহতের পরিবার। তাদের ধারণা প্রভাবশালী মহলের চাপে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
আফসানা আত্মহত্যা করেছেন বলে 'ধারণার' কথা রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার আফসানার মা বলেন, আফসানা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলে গলায় দাগ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার গলার দাগটি একেবারে ভিন্ন।
''এতে পরিষ্কার যে আফসানা আত্মহত্যা করেনি। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। অথচ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আফসানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা নয়, আত্মহত্যা দেখানো হচ্ছে।''
বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের বানানো রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আফসানার মা সৈয়দা ইয়াসমিন।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে আফসানার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আফসানাকে খুন করা হয়েছে দাবি করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করছেন তারা। এ নিয়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
আফসানার বড় ভাই ফজলে রাব্বি বলেন, প্রভাবশালী মহলের চাপে আফসানার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কথা বলা হচ্ছে।
''আফসানা আত্মহত্যা করেনি, তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিনসহ তার কয়েকজন বন্ধু মিলে আফসানাকে হত্যা করেছে।''
আফসানার মৃত্যুর পর রবিনের বন্ধুরা বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়েছে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য। এতেই পরিষ্কার যে আফসানা আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে, বলেন ফজলে রাব্বি।
রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের বক্তব্যের পর ঢাকার শাহবাগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানায় ছাত্র ইউনিয়ন।
ঢাকার মিরপুরের সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষার্থী আফসানাকে মৃত অবস্থায় গত ১৩ অাগস্ট রাতে আল হেলাল হাসপাতালে ফেলে যায় দুই তরুণ।
আফসানার মৃত্যুর পর থেকে এই তরুণীর পরিবার দাবি করে আসছে, আফসানাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এবং এতে তার কথিত বন্ধু তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন জড়িত।
রবিবার দুপুরে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ কে এম শফিউজ্জামান বলেন, দেহের কোথাও আঘাত না পাওয়ায় তারা ধারণা করছেন যে, এই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন।
তবে আরও কিছু পরীক্ষা বাকি থাকায় আফসানাকে ধর্ষণ কিংবা বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ