আর্থিক সমস্যার কারণে বেতন ও পরীক্ষার ফি দিতে পারেনি বাবা-মা। এজন্য বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী তাদের ১৪ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবোস করায়। আর এ অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে পৃথিবী থেকে চিরদিনের মতো বিদায় নিল ওই ছাত্রী।
সোমবার দুপুরে এই মর্মান্তি ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুর জেলা সদরের বাগাদী ইউনিয়নের মধ্য বাগাদী গ্রামে। আত্মহনের পথ বেছে নেওয়া সাথী আক্তার স্থানীয় বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। সাথীর বাবা হতদরিদ্র দেলোয়ার হোসেন তালুকদার চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে একটি তেলের আড়তে শ্রমিকের কাজ করে।
এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ওই স্কুলে ভাঙচুর করে ও সাথী আক্তারের সহপাঠীরা ফাতেমা বেগমকে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।
সাথীর সহপাঠী ও স্থানীয়রা জানান, গত ২৭ আগস্ট শনিবার পরীক্ষার প্রথম দিন সাথী বেতন ও পরীক্ষার ফি’র বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা বেগম তাকে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে কান ধরে ওঠবোস করান। এরপর সাথী বাড়িতে এসে বিষয়টি বাবা-মাকে জানান। কিন্তু পরদিন পূর্ণ বকেয়া টাকা না দিতে পারায় সাথী আর পরীক্ষা দিতে যায়নি। পরে অভিমানে বেলা ১১টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ও সাথী আক্তারের সহপাঠীরা ফাতেমা বেগমকে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, এই অফিস সহকারী ফাতেমা বেগম সকল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই খারাপ আচরণ করেন।
এদিকে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অলিউল্লাহ বলেন, ‘স্কুলে ভাঙচুরের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, স্কুলে দাঁড় করিয়ে রেখেছে, তাই সে টাকা ছাড়া পরীক্ষা দিতে স্কুলে যাবে না। পরে সে সুইসাইড করে। তবে মামলা হবে, তদন্ত হবে এরপরই বিস্তারিত বলা যাবে।’
বিডি-প্রতিদিন/৩০ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব