বাগেরহাটে বাবা হত্যার দায়ে ছেলেকে ফাঁসি ও ছোট ভাইকে হত্যার দায়ে বড় ভাইকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছেন পৃথক দুটি আদালত। আদালত একই সঙ্গে দণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের অর্থদণ্ড দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছোট ভাইকে হত্যায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ভবসিদ্ধুর স্ত্রী আঁখি বৈরাগীকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ফজলুল হক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহম্মদ রেজাউল করিম এই পৃথক আদেশ দেন। ছোট ভাইকে হত্যায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ভবসিদ্ধুর (৩০) অনুপস্থিতেতে এই আদেশ দেয়া হয়। অন্যদিকে বাবাকে হত্যায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তুহিন কাজী (২৭) রায় ঘোষণার সময়ে কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি শেখ মোহম্মদ আলী জানান, মোল্লাহাট উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট ভোররাতে ছেলে তুহিন কাজী তার বাবা আবু সাঈদ কাজীকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে সুমী আক্তার তার ভাই তুহিন কাজীকে আসামি করে ওই দিনই মোল্লাহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) তুহিন মণ্ডল তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আসামি তুহিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত তুহিনকে ফাঁসি ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
অপর হত্যা মামলার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারি কৌঁসুলি সীতারাণী দেবনাথ জানান, মোরেলগঞ্জ উপজেলার ঢেউয়াতলা গ্রামের প্রয়াত অমূল্য বৈরাগীর বড় ছেলে ভবসিদ্ধু বৈরাগীর সঙ্গে তার ছোট ছেলে অখিল বৈরাগী (১৮) পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে ২০০৮ সালের ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে দশটার দিকে অখিল তার মাছের ঘেরে কাজ করার সময় আকস্মিকভাবে তার বড় ভাই ভবসিদ্ধু সেখানে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। এই ঘটনার পরদিন নিহতের চাচাতো ভাই গুরুদাস বৈরাগী বাদী হয়ে ভবসিন্ধু ও ভবসিন্ধুর স্ত্রী আঁখি বৈরাগীর বিরুদ্ধে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার আলী তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৮ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ভবসিদ্ধুকে ফাঁসি ও তার স্ত্রীকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেন। একই সঙ্গে বিচারক ভবসিদ্ধুকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ কে আজাদ ফিরোজ টিপু।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ