লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে গলাকাটা সিন্ডিকেট গঠন করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে চরম দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। ভূক্তভোগীরা এ সিন্ডিকেট দূর করতে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জানা যায়, রায়পুর উপজেলায় এ সিন্ডিকেট বছরের পর বছর অপ:তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ দলিল লেখকদের ভাগ্যে পরিবর্তন না আসলেও সমিতির অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। কথিত সেরেস্তা খরচের নামে সমিতির বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ রায়পুরের জনগণ।
সমিতির এ ধরনের কার্যকলাপ সম্পূর্ণ অবৈধ ও ভোক্তা আইনের পরিপন্থী বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। সরকারি ফির বাইরে তারা মনগড়া টাকা নেন জমি রেজিস্ট্রি করতে। রশিদবিহীন এই টাকা দলিল লেখক সমিতির কর্মকর্তারা কোনো ব্যাংক একাউন্টে রাখেন না এবং সাধারণ সদস্যদের হিসাবও দেয়া হয় না। অফিসকে নামে মাত্র একটি অংশ দিয়ে বাকি টাকা সপ্তাহ শেষে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, নিরুপায় হয়ে এ টাকা দিতে হচ্ছে জমি ক্রেতা-বিক্রেতার। সমিতির বিরুদ্ধে গেলে জমি রেজিস্ট্রি করা হয় না। এমনকি সাব রেজিস্টারও লেখক সমিতির কাছে জিম্মি। এই সমিতি গঠন করা হয় অবৈধভাবে। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক ঠিক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে সমিতির কোনো নির্বাচন নেই। যা মন চায় তাই করা হচ্ছে সমিতির মাধ্যমে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, দলিল লেখক সমিতির নামে জোর করে টাকা আদায় বন্ধ করতে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রশাসনের কাগুজে এ সিদ্ধান্ত কেউ আমলে নেয়নি। উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
রায়পুর উপজেলা সাব-রেজিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারি বিধি মেনে যে কেউ সমিতি করতে পারে। তবে দলিল লেখক সমিতির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা বেআইনি।
বিডি প্রতিদিন/৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা