নওগাঁ সদর উপজেলায় এক মাদ্রাসা ছাত্রী (১১) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে সোহাগ হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে আটক করে স্থানীয় লোকজন উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে বুধবার নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেছেন। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার এজহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর ইউনিয়নের কীর্ত্তিপুর হাইস্কুল মাঠে গত মঙ্গলবার রাতে আহমদিয়া নূরানী হাফেজিয়া কওমী মাদ্রাসার আয়োজনে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় ওয়াজ শুনতে মাদ্রাসাটির ওই ছাত্রী ওয়াজ মাহফিল মাঠে যায়। প্রকৃতির ডাকে রাত ৮টার দিকে মাহফিল মাঠ থেকে ওই ছাত্রী বাইরে এলে আতিথা গ্রামের সোহাগ ছাত্রীটিকে জোর করে ধরে নিয়ে পার্শ্ববর্তী বেলতলি পুকুর পাড়ে ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় ছুটে এসে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় সোহাগকে আটক করে স্থানীয়রা।
পরে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে কীর্ত্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটক করে রাখে। চিকিৎসার জন্য রাতেই ওই ছাত্রীকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় বুধবার মামলা করেন।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মুনীর আলী আকন্দ বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ধর্ষণের শিকার ১১ বছরের একটি মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে বর্তমানে গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গাইনী ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেয়েটি ওই ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওই ওয়ার্ডের প্রধান সেবিকা নেহেরা বানু জানান, হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় ধর্ষণের কারণে আহত হয়ে মেয়েটির প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
কীর্ত্তিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান জানান, মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় লোকজন সোহাগকে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রেখে পুলিশে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর থানার ওসি তোরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে মামলা করেছেন। মামলার আসামি সোহাগকে স্থানীয় জনগণ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
আজ বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।