লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-হায়দরগঞ্জ সড়ক ছয় মাস আগে সংস্কারের জন্য পিচ ঢালাই তুলে ফেলেছেন ঠিকাদার কিন্তু কাজ করছেন না। এতে প্রায় ১১ কিলোমিটার জুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই বড় বড় খানাখন্দগুলোতে পানি জমে থাকে। এ কারণে ঐ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
নিয়ম অনুযায়ী এক-দেড় কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলে সংস্কার কাজ শেষ করে আবার নতুন করে এক-দেড় কিলোমিটারের কার্পেটিং তুলবেন ঠিকাদার। কিন্তু ঐ নিয়মের তোয়াক্কা না করে ঠিকাদার পুরো ১১ কিলোমিটারের কার্পেটিং একেবারে তুলে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলছে এখন হেলেদুলে। গাড়ি হেলেদুলে চলার কারণে প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে সময় লাগে ১ ঘন্টারও বেশি। অনেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরে বাবুরহাট সড়ক হয়ে হায়দরগঞ্জ বাজার যাচ্ছেন।
স্থানীয় কয়েকজন প্রতিনিধি বলেন, দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের ৮৫ শতাংশ হায়দরগঞ্জ বাজার থেকে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। হায়দরগঞ্জ বাজারেই গড়ে উঠেছে সয়াবিনের ৮টি চাতাল। দেশের খ্যাতনামা সয়াবিন তেল ও পোল্ট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখান থেকে সয়াবিন সংগ্রহ করে। অথচ ঠিকাদার গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কার করছেন ধীর গতিতে। সড়কের কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেছেন কিন্তু কাজ করছেন না। গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করলেও প্রায় ৭ মাসে ১০ শতাংশ কাজও করতে পারেননি ঠিকাদার। বিগত ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে জনদুর্ভোগ আরো চরমে পৌঁছেছে।
ঠিকাদার মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, কাজটি দ্রুত শেষ করতে মেশিন এনে একেবারে কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। আমরা শ্রমিক বেশি লাগিয়ে কাজটি দ্রুত শেষ করে ফেলব। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই রাস্তার কাজ শেষ হবে। নিন্মমানের কোন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রায়পুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শুরুতে রায়পুর-হায়দরগঞ্জ সড়কটি মেরামতের জন্য আরটিআইপি-২ প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুর কার্যালয় থেকে দরপত্র আহবান করে। ৪ কোটি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৮৯ টাকায় মোঃ ফরহাদ হোসেনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাছান রুপালী জেবি কাজটি পায়। এ কাজটি চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেন নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রোলার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদার আপাতত কাজটি বন্ধ রেখেছেন। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগের আলোকে নিন্মমানের কিছু খোয়া ফেরত দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার