ঝালকাঠিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া এবং একটি হিন্দু পরিবারের দুই নারীসহ তিনজনকে মেরে আহত করার অভিযোগে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঝালকাঠি থানায় শিক্ষক আ. লতিফ ও উত্তম দাস বাদী হয়ে এজাহার এই দায়ের করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আ. লতিফের অভিযোগটি মামলা হিসেবে দুপুরে রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর ওসি মো. মাহে আলম। যেহেতু একই ঘটনায় ২টি অভিযোগ এসেছে তাই একটি মামলা রেকর্ড করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান তার দলবল নিয়ে ঝালকাঠি শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়াকে টেনে হিঁচড়ে তার গাড়িতে উঠিয়ে কীত্তিপাশা বাজার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে অপর ব্যাবসায়ী উত্তম দাসকে ঘর থেকে বের করেন। এরপর শিক্ষক লতিফ ও উত্তমকে সেখানেই হকিস্টিক দিয়ে বেধরক মারধর করতে থাকে। এ সময় তাকে রক্ষা করতে এসে মারপিটে আহত হয় উত্তম এর পরিবারের দুইজন নারী। মারপিটের এক পর্যায়ে শিক্ষকের হাত-পা ভেঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে শিক্ষক ও ব্যবসায়ী দুজনকেই ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসা হয়। থানা থেকে পুলিশ তাদের হাসপাতালে পাঠায়। ওই ইউনিয়নের গোবিন্দ ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. লতিফ মিয়া, কীত্তিপাশা বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাস, তার বোন রীনা দাস এবং ভাইয়ের স্ত্রী আঞ্জনা দাস বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান দাবি করেন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আরিফ খান, লতিফ মাস্টার, উত্তমসহ একটি চক্র। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে গত মঙ্গলবার তার গাড়িতে হামলা করে ওই শিক্ষক। এসময় স্থানীয়রা শিক্ষক ও উত্তমকে আটক করে থানায় দেয় বলে দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতাল হোসেন।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি মাহে আলম বলেন, শুক্রবার রাতে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দু'টি এজাহার পেয়েছি। প্রধান শিক্ষক আ. লতিফের মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। অপর অভিযোগটি একই সাথে তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/০২ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব