চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের মাঠে মাঠে কাঁচা-পাকা ধান দোল খাচ্ছে। ধানের ফলন দেখে মন ভরে গেলেও ঝড় ও অতিবৃষ্টি কৃষকের মনে ফসলহানির শঙ্কা তৈরী করছে। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে নীচু জমির ধান তলিয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় অনেক কৃষক আধা-পাকা ধান কেটে ফেলছে। আল্লাহ যেন ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে তাদের সোনার ফসল রক্ষা করেন-এমনটাই প্রার্থনা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সলঙ্গা-তাড়াশ রাস্তার দুপাশের অনেক নীচু জমির ফসলগুলো তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা বুকভরা বেদনা নিয়ে বুক পানির মধ্যে নেমে কাচা ধানগুলো কেটে নিচ্ছে। চলনবিলের তাড়াশের বিনসাড়া, কোহিত এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পুকুর ও খালের মুখ বন্ধ করায় পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শত শত হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আবার কিছু ভুমিদস্যুরা তাড়াশ-নিমগাছি, তাড়াশ-কাটাগাড়ী, তাড়াশ-রানীরহাট রাস্তা সংলগ্ন খালগুলো ভরা করায় ভাদাস, কাস্তা বেত্রাশিন, বিনসাড়া, বারুহাস, মাগুড়া বিনোদ দাগারিয়া, দিঘি সগুনা দেশীগ্রামের বিস্তীন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর ভরাটমুখ খুলে দেয়ার জন্য লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।
সলঙ্গা গ্রামের কৃষক আবু ছাইদ জানান, একমাত্র সম্বল দেড় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে সব তলিয়ে গেছে। আগামী দিনগুলো কিভাবে চলবো এ চিন্তায় বিভোর তিনি।
কৃষক আইনুল হক জানান, সার-জীব ও পরিশ্রম করে সোনার ফসল ফলিয়েছিলাম। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি সব কেড়ে নিলো। এখন ধানগুলো গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছি। বিরাট ক্ষতি হয়ে গেলো। কৃষক আফছার উদ্দিন জানান, ঝড়-বৃষ্টিে ধান গাছ হেলে পড়েছে। মাটিতে নুয়ে পড়ছে। আবার ঝড়-বৃষ্টি হলে ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে-এমন আশঙ্কায় আধাপাক ধান কেটে ফেলছি।
কৃষক রহিজ উদ্দিন, নুর ইসলাম জানান, ফসলের ভাল ফলন দেখে মন ভরে গেলেও প্রতিদিন ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় চিন্তিত রয়েছি। সোনার ফসল ঘরে তুলে যেন লাভবান হতে পারে এজন্য- সবসময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আরশেদ আলী জানান, চলনবিল অধুষ্যতি সিরাজগঞ্জে এবার ১লাখ ৪০ হাজর ১১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদ হয়েছে। আর সাড়ে ৫ লক্ষ মে.টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বেশি চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় শতাধিক হেক্টর জমির ফসল ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়-বৃষ্টি চলমান থাকলে ক্ষতির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য ৮০% ধান পাকলেও কৃষককের কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্টি দুর্যোগও রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন ও খালের মুখ ভরাট করায় জলাবদ্ধা সৃষ্টি হয়ে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।
তাড়াশ ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনসুর উদ্দিন জানান, সকালে অভিযান চালিয়ে দিঘী সগুনা, লালুয়া মাঝিড়া, কোহিত ও মাগুড়া বিনোদ এলাকার চারটি খালের মুখ খুলে দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল রক্ষা পাবে বলে তিনি জানান। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
শিরোনাম
- হাই কোর্টে স্থায়ী হলেন অভ্যুত্থানের পরে নিয়োগ পাওয়া ২২ বিচারপতি
- ভোজ্যতেলের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
- শিল্পকলায় ‘সুড়ঙ্গ’
- ‘ডাউন সিনড্রোম জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান’
- আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে: মাসুদুজ্জামান মাসুদ
- সাবেক এমপি ফরহাদের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মামলা
- সত্যিকারের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে ৭ নভেম্বর : রিজভী
- নাশকতার অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ. লীগের ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- চাটখিল-সোনাইমুড়ি সড়কে একদিকে উচ্ছেদ, অন্যদিকে দখল
- আজহারীর নকল বই বিক্রি : ডিবিকে তদন্ত করতে আদালতের নির্দেশ
- প্রেমিকাকে পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
- বগুড়ায় পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগে সেমিনার অনুষ্ঠিত
- সিডনিতে ‘ওয়াসিডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রথম পুনর্মিলনী
- ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা কেনার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে
- কুষ্টিয়ায় চিংড়িতে জেলি, ৬ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- বগুড়ায় আলুর দাম নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা
- কলাপাড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরামের কমিটি গঠন
- পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে : নাসির উদ্দীন
- হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত
- নারায়ণগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ক্লিনিং ডে উদ্বোধন
ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় সিরাজগঞ্জের কৃষকরা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
অনলাইন ভার্সন
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন
এই বিভাগের আরও খবর