নতুন কমিটিতে সুবিধাজনক পদ না পাওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের সুসংগঠিত ছাত্রদলে অবশেষে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সাবেক নেতা কর্মীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। নতুন জেলা কমিটির ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিন, পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরখাব, রনিসহ বিভিন্ন শাখার প্রায় ২ শতাধিক নেতাকর্মী ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করেছে বলে একটি নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছেন।
বুধবার রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির কাছে লিখিত ভাবে ওই সকল নেতাকর্মী ছাত্রদলের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পত্র জমা দেন।
জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল দীর্ঘ ১৫ বছর পর ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে বিএনপির মহাসচিবের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান জেলার নতুন ছাত্রদলের সভাপতি কায়েস সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। এতে করে ছাত্রদলের কিছু ত্যাগী নেতার নাম বাদ পড়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন অনেকেই। তবে বিএনপির মহাসচিবের সম্মানে সভাস্থল ত্যাগ করেন পদ বঞ্চিতরা।
সম্মেলনে দলের জন্য নিবেদিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্রদের বাদ দিয়ে অযোগ্য, সুবিধাভোগীদের নিয়ে কমিটি গঠন করায় ঠাকুরগাঁও ‘টক অব দ্যা টাউনে” পরিণত হয়। ছাত্রদলের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক একজন ট্রাক ড্রাইভারকে মনোনীত করায় নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়। সেই সাধারণ সম্পাদক ট্রাক ড্রাইভার অহিদুলকে নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার সিন্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বুধবার (২ মে) রাতে ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার গোলায়পাড়া বিএনপি ও ছাত্রদলের প্রায় ২ শতাধিক নেতাকর্মীরা ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কাছে লিখিতভাবে সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পত্র জমা দেন। পদত্যাগকারী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রবিন জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়ে যারা রাজপথ কাঁপিয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটিতে অছাত্র, ড্রাইভারকে সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়। ওই নেতৃত্বে জেলা ছাত্রদল কখনও সুসংগঠিত হতে পারে না।
পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরখাব জানান, ঠাকুরগাঁওবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষা ছিল যে, জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে দলের দু:সময়ের কান্ডারীদেরকে ভালো জায়গায় রাখা হবে। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তিকে মূল দায়িত্ব অর্পণ করায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই সেচ্ছায় ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পয়গাম আলী জানান, বিএনপির অনেক ছাত্রদল কর্মী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনেকে পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিমান নিয়ে অব্যাহতি পত্র জমা দিতে এসেছে। আমরা নেতাকর্মীরা তাদের অভিমান ভাঙ্গিয়ে ছাত্রদলকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলবো।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার