রাঙামাটি প্রত্যন্ত ইউনিয়ন সাজেকে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। অভাব অনটনে দিন কাটছে প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের।
এসব গ্রামগুলো হলো-করলা ছড়া টিলা, শিয়ালদহ পাড়া, গন্ডাছড়া পাড়া, উদলছড়ি, নিউ থাং শং, জপুই, রুইলুই পাড়া, কংলাক পাড়া, একুজ্জাছড়ি ও উত্তর ভাইবোনছড়া। এসব এলাকায় বসবাস করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার। গেল বছর জুমে ভাল ফলন না হওয়ার কারণে এ খাদ্য সংকটের দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার ভারত সীমান্তেবর্তী এলাকা সাজেক ইউনিয়ন। যার আয়তন প্রায় ৬০৭ বর্গ মাইল। যা দেশের অন্যান্য জেলার চেয়েও বড়। এ ইউনিয়নের লোকসংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। এ অঞ্চলে প্রকৃতিগত আপার সম্ভবনা থাকলেও নেই যোগাযোগে সুব্যবস্থা। তাই গড়ে উঠেনি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজার। পাহাড়ে জুম চাষ করে চলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকা। তবে সম্প্রতি সময় পাহাড়ে বৈরী আবহাওয়ায় ও অবৈধ অস্ত্র ধারীদের চাঁদাবাজীর কারণে করতে পারেনি অনেকে জুম চাষ। তাই বছরের শেষ মুহতে তাদের পরতে হয়েছে খাদ্য সংকটে।
এব্যাপারে সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা জানান, গেল বছর পাহাড়ে জুমে ফলন কম হওয়া ও এলাকায় গাছ-বাঁশ কমে যাওয়ায় মানুষের আয়ও কমে গেছে। ফলে এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ তিন মাস ধরে জঙ্গলের লতাপাতা, পাহাড়ি আলু, কুমড়া ও কলা খেয়ে কোন রকম বেঁচে আছে এসব অঞ্চলের মানুষগুলো। অনেকে খেতে না পেয়ে ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এদিকে সাজেতে খাদ্য সংকটের খবর পেয়ে অসাহায় মানুষগুলো পাশে দাঁড়ালো খাগড়াছড়ি সেনাবাহিনী। খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে চারটি হেলিকাপ্টার করে দূর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ মানুষগুলো কাছে পৌঁছানো হয় খাদ্যশষ্য। দেখায় হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাও।
খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মুহাম্মদ ইসমাইল খাঁ জানান, ২৪পদাতিক ডিভিসন ও খাগড়াছড়ি রিজিয়রে পক্ষ থেকে সাজেক এলাকার প্রত্যান্ত অঞ্চল যেখানে সড়ক ব্যবস্থার কোন সুযোগ নেই, সেখানে সেনাবাহিনীর চারটি হেলিকপ্টারে করে অসহায় মানুষগুলোর কাছে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে । এছাড়া যারা অসুস্থা হয়ে পরেছে তাদেরও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। কারণ সেনাবাহিনী আত্মমানবতার সেবাই নিয়োজিত। ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনীর এ ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে খাদ্য সংকটের কথা ছড়িয়ে পরায় দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। সেনাবাহিনী ছাড়া এখনো পর্যন্ত এসব গ্রামবাসীর সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে এসেনি বলে জানান স্থানীয়রা।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন