প্রত্যেক সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বাবা-মায়ের আশ্রয়। যদি কোন সন্তানকে প্রশ্ন করা হয় তার আদর্শ কে? একবাক্য সকলে বলবে বাবা অথবা মা। একটি শিশু জন্মের পর থেকে মা-বাবার অকৃত্তিম ভালবাসায় বড় হয়। কিন্তু যখন বাবার ব্যক্তিগত লোভ লালসার স্বীকার হয়ে কোন সন্তান কষ্টের সাগরে ভাসে তখন এই সম্পর্কের আর কি মূল্য থাকে ? তেমনি এক নিষ্ঠুর বাবা ও হতভাগা সন্তানের সন্ধান মিলেছে লামায়।
অভিযোগ উঠেছে নেশার টাকার জন্য নিজের সন্তানকে বিক্রি করেছে বাবা মোঃ ইব্রাহীম (৫০)। শিশু মোঃ হাবিবুল্লাহ (৯) লামা আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্র। মোঃ ইব্রাহীমের বাড়ি লামা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড সংলগ্ন মিশন পাড়া এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে চকরিয়া উপজেলার কাকারা এলাকা থেকে শিশুটিসহ আরো ৩ জনকে আটক করেছে চকরিয়া থানা পুলিশ।
জানা গেছে, নিষ্ঠুর পিতা মোঃ ইব্রাহীম ৪ ছেলে ২ মেয়ের জনক। ৬ জন সন্তানের বাবা হলেও কখনও বাবার দায়িত্ব পালন করেনি সে। পেশায় একজন রিক্সা চালক। সব সময় গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করে মাতাল থাকে ইব্রাহীম।
ইব্রাহীমের বড় ছেলে আবু বক্কর জানান, গত ১২ মে শুক্রবার বিকেলে তার ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ পার্শ্ববর্তী বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাড়া এলাকায় নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে তার বাবা মোঃ ইব্রাহীম নিজের রিক্সায় করে লামা বাস স্টেশনে জনৈক আবূ তৈয়ব নামে এক মৌলভী দিয়ে পাচার করে দেয়। বাবা তার নেশার টাকার জন্য আমার ভাইকে বিক্রি করেছে।
তিনি আরো জানায়, মৌলভী আবু তৈয়ব লামা রুপসীপাড়া এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতি করে। এদিকে সন্তান হারিয়ে ৪দিন যাবৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে তার মা রোকিয়া বেগম (৪৩)।
পূর্ব পাড়া এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার কপিল উদ্দিন বলেন, শিশুটি হারিয়ে গেলে সকলে খোঁজাখুজি করলেও বাবা ইব্রাহীমের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। তাকে সন্দেহ করে আটক করে চাপ দিলে তার দেয়া তথ্য মতে শিশু হাবিবুল্লাহ ও মৌলভী আবু তৈয়বসহ মোট ৪ জনকে মঙ্গলবার সকালে আটক করে চকরিয়া থানা পুলিশ। উদ্ধারের খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন দিয়ে অভিযুক্ত পিতাকে চকরিয়া থানায় পাঠানো হয়েছে।
চকরিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে শিশুটি উদ্ধার করি। এছাড়া আরো ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। শিশুটির পরিবারের লোকজনকে থানায় আসার জন্য খবর দেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৬ মে ২০১৭/হিমেল