খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রবল ও মাঝারি বর্ষণে ঝুঁকিতে থাকায় পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত বিদ্যালয়গুলোর ৯টির মধ্যে ৩টি বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে উপজেলা প্রসাশন।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শেখ শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকায় দীঘিনালা ক্ষেত্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মায়াফা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চমড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, মায়াফা পাড়া বিদ্যালয়ের ভবনের পাশের মাটি পাহাড় ধসে নিচে পড়ে যায়। ভবনের প্রতিটি পিলারই এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গত কয়েকদিন টানা প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ৩টি বিদ্যালয়ের ভবনগুলো মারাত্মকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
মায়াফাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক টিপলু বড়ুয়া জানান, মায়াফা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০৫ জন, এর মধ্যে পিএসসি পরীক্ষার্থী ১৪ জন। চমড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৮২ জন, এর মধ্যে পিএসসি পরীক্ষার্থী ১৯ জন।
তিনি আরও জানান, টানা বষর্ণ হওয়ায় পাহাড়ের উঁচু টিলায় অবস্থিত স্কুলে কাদা মাটি পেরিয়ে যাওয়াটা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে স্কুল ভবনের আশপাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী তুরান ত্রিপুরার পিতা তজেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকায় গত মঙ্গলবার থেকে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করায় আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে শঙ্কিত অবস্থায় আছি।
পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদ গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের নিচে একটি ধারক দেয়াল নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু গত কয়েকদিনের বর্ষণে ধারক দেয়ালেও মাটি সরে গেছে।
চমড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তন্ময়া চাকমা জানান, পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকায় স্কুলটি মঙ্গলবার থেকে প্রশাসন বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শেখ শহিদুল ইসলাম আরও জানান, প্রবল ও মাঝারি বর্ষণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকায় প্রথমে দুইটি বিদ্যালয় ও পরে আরেকটি বিদ্যালয়সহ তিনটি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৬টি বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশই নির্মাণ কাজ ত্রুটির কারণে নানাভাবে ছাত্রছাত্রীরা পাঠ গ্রহণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ জুলাই, ২০১৭/মাহবুব