বান্দরবানের সদরসহ জেলার প্রায় ৭টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে লামা, রুমা ও আলীকদম উপজেলায় বন্যার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে গত মঙ্গলবার থেকে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন অনেক এলাকা।
মঙ্গলবার রাতের ভারী বর্ষণে ডুবে গেছে লামা বাজারের ৩ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সহস্রাধিক বাড়িঘর, স্কুল-মাদ্রাসা ও অফিস-আদালত। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায়পাহাড়ী ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে সাঙ্গু ও বাঁকখালী নদীল পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জেলা প্রসাশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
পানিবন্দি হয়ে রয়েছে জেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। লামা ও আলী কদমের স্কুলগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও লামা পৌরসভার সমন্বয়ে আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান জেলা পরিষদ সদস্য মো. মোস্তফা জামাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লামা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, লামা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় লামা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লামা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দ্বিতল-ত্রিতল দালানে আশ্রয় নিয়েছে উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ। একইভাবে আলীকদম উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খোলা হয়েছে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র। এখানে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে খাবার-দাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সড়কের অনেক উপর পানি উঠে যাওয়ায় লামা- আলীকদমের সাথে জেলা সদরসহ সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কায় শর্তকতা জারী করেছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লামা পৌর সভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জানান, গত ৩ দিনের ভারী বর্ষণে লামা উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পৌর এলাকার পুরো বাজার এখন ৫ ফুট পানির নীচে। এতে ৩ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সাথে উপজেলা অফিস, থানা ভবনসহ অধিকাংশ সরকারী-বেসরকারী অফিস আদালতও পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্তÍ হয়েছে। ভারী বর্ষন অব্যহত থাকায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে আলীকদম উপজেলার পাহাড়ী ঢলে নতুন আরো অনেক এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তিন সহস্রাধিক মানুষ। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ব্যাপক পাহাড় ধসের কারণে রুমা-বান্দরবান সড়ক গত ২২ দিন ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে রুমা উপজেলার শত শত মানুষকে নদী পথে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।